শিক্ষার আলো ডেস্ক
ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ডিজাইন কম্পিটিশন ফর সেইফ অ্যান্ড এফোর্ডেবল ফেরি -২০২৩ প্রতিযোগিতায় অনারেবল মেনশন অর্জন করেছে বুয়েটের ১১ সদস্যের একটি দল। এ কাজে তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ছিলেন প্রফেসর ড. জোবায়ের ইবন আওয়াল।
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার অর্জন করে জার্মানি থেকে দুটি এবং ইন্দোনেশিয়ার একটি টিম। আর বুয়েট দলের অর্জন অনারেবল মেনশন।
জানা যায়, ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফেরি সেইফটি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এবারের আসরের চ্যালেঞ্জ ছিল এমন একটি ফেরি ডিজাইন করা যা ফিলিপাইনের ম্যানিলা শহরের প্যাসিগ নদীতে চলার উপযোগী ইলেকট্রিক ফেরি এবং একই সাথে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধবও।
এ নিয়ে বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং প্রতিযোগী টিমের অন্যতম সদস্য আবদুল কাদের বলেন, ফিলিপাইনের প্যাসিগ নদীতে চলাচলের উপযোগী একটি ১০০ যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ফেরি ডিজাইন করাই ছিল আমাদের প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। একটি পূর্ণাঙ্গ ফেরি ডিজাইন করার লক্ষ্যে প্রথমে ঐ নির্দিষ্ট রুটের সকল ধরনের তথ্য সংগ্রহ করি এবং অনেকগুলো বিকল্প প্রাথমিক ডিজাইন তৈরি করি। সবগুলো ডিজাইন থেকে বিভিন্ন প্যারামিটারের ভিত্তিতে সর্বোত্তম ডিজাইনটি বাছাই করি – যেটা ছিল অন্যতম কঠিন এবং সময় গ্রাসকারী কাজ। এরপর বাকি কাজগুলো বিভিন্ন নিবন্ধিত সফটওয়্যার দিয়ে দ্রুততার সাথে ট্রায়াল অ্যান্ড এরর এর মাধ্যমে সম্পাদন করি। ভবিষ্যৎ মহামারি এবং সম্ভাব্য সকল সম্ভাব্য দুর্ঘটনার বিষয়টি মাথায় রেখে ফেরিটি ডিজাইন করা হয়েছে যেন যাত্রীরা নিরাপদ এবং আরামদায়ক যাত্রা উপভোগ করতে পারে।
এছাড়া, প্রতিযোগী মিনহাজুল ইসলাম নাজাত বলেন, এবারের প্রতিযোগিতায় একটা বিশেষত্ব ছিল ফেরির প্রপালশান সিস্টেম, যেহেতু সবাই এখন পরিবেশ নিয়ে সচেতন তাই ডিজেল বেসড সিস্টেম এর বদলে ইলেক্ট্রিক প্রপালশান সিস্টেম ব্যবহার করতে বলা হয়। আমাদের ফেরির জন্য আমরা প্রথমে কয়েকটা ইলেক্ট্রিক প্রপালশান সিস্টেম বিবেচনা করি, পরে ফিলিপাইনের রুট আর ফেরির ধারণক্ষমতা অনুযায়ী একটি সিস্টেম নির্বাচন করি।
অনারেবল মেনশন পাওয়া এই টিমের ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজর প্রফেসর ড. জোবায়ের ইবন আওয়াল বলেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা আন্তর্জাতিক মানের ফেরি ডিজাইন করে দ্বিতীয়বারের মতো এই অসামান্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলো।এটাই সবচেয়ে বড় একটি প্রাপ্তির বিষয়।এমন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স সামনের দিনে আমাদের দেশে নৌযান এবং নৌ যন্ত্রকৌশল বিষয়ে উন্নতি সম্পর্কে আশাবাদী করে তুলবে বলে আমি মনে করি।
Discussion about this post