নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রোবটিক্স প্রতিযোগিতা ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ (ইউআরসি) ২০২০ এর চূড়ান্ত বাছাই পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দল ‘মঙ্গল তরী’।
গতকাল শনিবার ইউআরসি তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ‘মঙ্গল তরী’ নামের দলটি ৩ টি বাছাই পর্বে ১০০ পয়েন্ট এর মধ্যে মোট ৯৩.০৮ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। যা বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত একমাত্র দল এবং এশিয়ার মধ্যে প্রথম অবস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের মার্স সোসাইটি আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা প্রতি বছর ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের মার্স ডেসার্টে হয়ে আসছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এখানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। এবার টানা চতুর্থ বারের মত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ‘মঙ্গল তরী’ সাফল্যের সাথে প্রিলিমিনারি পর্যায় পার করেছিলো। মূল আসর করোনা ভাইরাসের কারণে বাতিল হওয়ায় পূর্বোক্ত কাজের ভিত্তিতে সিস্টেম একসেপ্টেন্স রিভিও এর উপর ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে এবার।
জানা যায়, করোনায় ইউআরসি ২০২০ এর ফাইনাল বাতিল হলেও ৯৩টি দলের মধ্যে ৬৮টি দল তাদের এসএআর প্যাকেজগুলি জমা দিতে সক্ষম হয়েছিল। পরে তা হতে ফাইনালে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম ৩৬টি দলের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় মিশিগান মার্স রোভার টিম এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড স্টুডেন্ট রোবটিক্স যথাক্রমে ৯৬ ও ৯৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এই বছর এসএআর শীর্ষস্থানীয় ৩৬ টিমের মধ্যে ইউআরসি ২০২০ ফাইনালের জন্য যোগ্যতা অর্জনের সর্বনিম্ন পয়েন্ট ছিল ৮১।
বিশ্ব রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এমন অর্জন প্রসঙ্গে ‘মঙ্গল তরী’র উপদেষ্টা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.খলিলুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ইউআরসিতে তৃতীয় পজিশনে থাকাটাও অনেক বড় একটা ব্যাপার। এবারের প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র এসএআর এর ভিত্তিতে হয়েছে, আশা করি আমরা পরবর্তীতে মূল প্রতিযোগিতায় যেয়েও এই অবস্থান ধরে রাখতে পারব। আমি আমার টিমকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা সবাই অনেক হার্ড-ওয়ার্ক করেছে, এটা সম্পূর্ণ তাদের ক্রেডিট।
২০১৬ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘মঙ্গল তরী’ দলটি পথচলা শুরু করে। মঙ্গল তরী রোবট এর সর্বশেষ তম সংস্করণ মঙ্গল-তরী ভার্সন ৪.০ হারানো বস্তু পুনরুদ্ধার করা, সম্পূর্ণ অটোনোমাস ট্র্যাভারসাল মিশন, ভিজ্যুয়াল ডেটা সংগ্রহ করা, নভোচারী সরঞ্জাম পরিষেবাতে সহায়তা করতে এবং জীবনের লক্ষণগুলি পরীক্ষা করার জন্য বায়ো-সিগনেচার পরীক্ষার পাশাপাশি গ্রহ বিশ্লেষণ সম্পাদন করার ক্ষমতা দিয়ে সজ্জিত। এই বৈশিষ্ট্যগুলি ইউআরসি যোগ্যতার একটি হাইলাইট হিসাবে মঙ্গল তরী বেশ কয়েকটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় জয় লাভ করেছে।
‘মঙ্গল তরী’ ফিরোজ ওয়াদুদের নেতৃত্বে দলটি ছয়টি উপ-বিভাগে বিভক্ত। ইলেকট্রনিক্স ও অটোনোমাস টিমের দায়িত্বে আছেন ফিরোজ ওয়াদুদ, আশিক আদনান কন্ট্রোল ও সফটওয়্যার দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হাসিব ইসলামের নেতৃত্বে আছে কমিউনিকেশন টিম; শাহরিয়ারের নেতৃত্বে বিজ্ঞান ও প্রকাশনা দল। এছাড়াও একটি ডিজাইন দল রয়েছে মাশিয়াত মামুনের নেতৃত্বে। আর ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে আছেন রায়হান রহমান।
Discussion about this post