শিক্ষার আলো ডেস্ক
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মদিন আজ। ১৯৪৯ সালের এই দিনে তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তাঁর জন্ম। দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রদর্শিত পথ, আদর্শ, দিকনির্দেশনা আমাদের জন্য অনুকরণীয় মডেল।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অবদান স্মরণীয় রাখতে এবং তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ ক্রীড়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন আজ তাঁদের ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান করা হয়।
এ পুরস্কার বিজয়ীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সব অনুষ্ঠানের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি ক্রীড়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার আরও উৎসাহিত করবে এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে চলমান অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে শেখ কামালের যে অবদান, সেটা চিরদিন মানুষ স্মরণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আপন ছোটভাইকে নিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মাসটা (আগস্ট) আমাদের শোকের মাস। এই মাসে কামালের জন্মদিন। কামাল আমার ছোট, আমরা পিঠাপিঠি দুই ভাই-বোন। খেলার সাথি, আন্দোলন-সংগ্রামেও একসঙ্গে ছিলাম।
বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি এ অনার্স পাস করেন। তিনি দেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতারবাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা। তা ছাড়া তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে সুপরিচিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় বেশ উৎসাহ ছিল তাঁর। শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন পেয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদাতবরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার নির্মম বুলেটে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদাতবরণ করেন তিনি।
Discussion about this post