শিক্ষার আলো ডেস্ক
গত রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের মাল্টিপারপাস ভবনের মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মাইক্রো-কোর্স অন ইন্টেলেকচুয়াল হিস্ট্রি অব স্টার্টআপ’ শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকার ‘ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান সীড’ উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশের ৪ কোটি ১০ লাখ পরিবারের প্রতিটির কমপক্ষে একজন সদস্যের জন্য স্মার্ট কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তানির্ভর কর্মজীবন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিজনেস ইনকিউবেটর চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড’র কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
এটি বাংলাদেশের প্রথম স্টার্টআপ স্টুডিও, যা কো-এন্টারপ্রেনারশিপ মডেলে যাদের একটি ভালো বিজনেস আইডিয়া বা ইনোভেশন রয়েছে তাদের পাশাপাশি যাদের ভালো বিজনেস আইডিয়া নেই কিন্তু একটি স্টার্টআপ-এর কো-ফাউন্ডার হবার দক্ষতা রয়েছে, তাদেরও অংশগ্রহণের সুযোগ দেবে। প্রথম ব্যাচে ইতোমধ্যে ১০টি স্টার্টআপ টিমকে বরাদ্দপত্র দেওয়া হচ্ছে এবং পাশাপাশি এই মাইক্রো-কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে আরও ২টি ব্যাচকে পরবর্তীতে এই লঞ্চপ্যাডে নেওয়া হবে।
চুয়েটের এই স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড ৬ মাসব্যাপী `OVenture Building Program’-এর মাধ্যমে বছরে ৫০টি করে নতুন স্টার্টআপ তৈরি করে মার্কেটে যাত্রা শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড’র কার্যক্রম চালু করা হবে।
বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপ ভেঞ্চারস যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জিএসএম জাফরুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক।
মো. সামসুল আরেফিন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে অগ্রযাত্রা তাতে চুয়েটের শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী। তাদের সৃজনশীল উদ্যোগ ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার মাধ্যমে দেশ সত্যিকার প্রযুক্তিনির্ভর উন্নত জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হবে।
জিএসএম জাফরুল্লাহ বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ‘ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান সীড’ উদ্যোগের আওতায় যে ১৪টি প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে। তারই একটি হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আইডিয়া, প্রজেক্ট, গবেষণা এবং থিসিস রিপোর্টকে স্টার্টআপ হিসেবে গড়ে তুলবে। চুয়েটের শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিজনেস ইনকিউবেটর হওয়ার পাশাপাশি এটার নান্দনিক ডিজাইন সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ টেকসই পদ্ধতিতে আমরা এখন থেকে এই ইনকিউবেটরের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই।
ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেদের সৃজনশীল উদ্যোগের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্নের ইনকিউবেটরের তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘কালচারাল হিস্ট্রি অব স্টার্টআপ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের ইয়ুথ কোর্ডিনেটর ও প্রোগ্রাম অফিসার মাহমুদুল হাসান এবং ‘হিস্ট্রি অব স্টার্টআপ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আইডিয়া প্রজেক্টের টিম লিডার ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট সিদ্ধার্থ গোস্বামী। কর্মশালায় চুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। পরে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী ইনকিউবেটরে বরাদ্দপ্রাপ্ত ১৭টি স্টার্টআপ ও প্রযুক্তি কোম্পানির বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করেন।
তিনি ইনকিউবেটর সংশ্লিষ্ট এবং চুয়েটের প্রশাসনের সাথে ইনকিউটবেটরের কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এরপর ইনকিউবেটর এলাকায় তিনি স্মারক বৃক্ষরোপণ করেন।
Discussion about this post