ক্যারিয়ার ডেস্ক
হাঙ্গেরি ইউরোপের একটি অন্যতম রাষ্ট্র । এর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে স্লোভাকিয়া, ইউক্রেন, রোমানিয়া, অস্ট্রিয়া। দেশটির আয়তন ৯৩,০৩০ স্কয়ার কিলোমিটার।স্কলারশিপ ও লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজের সুবিধা থাকায়, বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
হাঙ্গেরি সরকার ২০১৩ সাল থেকে ‘স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ’ দিয়ে আসছে। ২০১৯ থেকে বাংলাদেশে চালু হয়েছে এই স্কলারশিপ। প্রতি শিক্ষাবর্ষে প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের আওতায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট, ওয়ান টায়ার মাস্টার্স ও ডক্টরাল নিয়ে হাঙ্গেরিতে পড়ছেন। বাংলাদেশ থেকে আন্ডারগ্র্যজুয়েট ও মাস্টার্স পর্যায়ে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে
এই স্কলারশিপ এর আওতায় আবেদন করতে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার’স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে।
পড়তে পারবেন সকল বিষয় যেমনঃ মেডিসিন, ফার্মেসী, ডেন্টিস্ট্রি, আর্কিটেকচার, আইন, ভেটেরিনারি সার্জারি, ফরেস্ট্রি ইঞ্জিন্যারিং ইত্যাদি। সকল বিষয় এর লিষ্ট জানতে ভিজিট করুন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – https://stipendiumhungaricum.hu/
সুযোগ সুবিধাসমূহ
১। টিউশন ফি সম্পূর্ণ ফ্রি।
২।ব্যাচেলর ও মাস্টার্স প্রোগ্রামে ১২০ ইউরো ।আর, পিএইচডি প্রোগ্রামে প্রথম ৪ সেমিস্টার ৩৯০ ইউরো ও পরবর্তী চার সেমিস্টার ৫০০ ইউরো ।
৩। ক্যাম্পাসের ডরমিটিরিতে বিনা ভাতায় থাকার ব্যবস্থা। উল্লেখ্য, ডরমিটরিতে না থাকতে চাইলে মাসে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১২ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বাড়ি ভাড়া ভাতা বাবদ।
৪। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স (স্বাস্থ্যবিমা) – প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২৭৫ ইউরো।
হাঙ্গেরিতে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন। যা দিয়ে খুব সহজেই নিজের বারতি খরচ কভার করতে পারবেন। গড়ে একজন বিদেশি শিক্ষার্থী ঘন্টায় ৮০০ HUF এবং সর্বোচ্চ ১৫০০ HUF আয় করতে পারে।
আবেদনের যোগ্যতা
১। বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
২। অবশ্যই ১৮ বছর বয়স হতে হবে। বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে আবেদন করতে পারবেন না।
৩। ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক পাস।
৪। আইইএলটিএস স্কোর ন্যূনতম ব্যান্ড স্কোর ৫ থাকতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আইইএলটিএসের প্রয়োজন হয় না।
৫। আবেদনকৃত প্রোগ্রামের Entry Qualificationপূরণ করতে হবে।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট ও ডক্টরাল—তিনটির যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক আবেদন করলে আবেদনপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
আবেদনের সময়সীমা
আবেদনের সময় প্রতি বছর জানুয়ারি এর মধ্যে। তবে হালনাগাদ ডেডলাইন জানতে নজর রাখতে হবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ – https://stipendiumhungaricum.hu/
যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য
বিশ্বের অনেক দেশ সহ বাংলাদেশের জন্য এই স্কলারশিপ ওপেন আছে।
আবেদন প্রক্রিয়া
প্রথমে, Stipendium Hungaricum Websiteএ সর্বোচ্চ ২ টি প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে। শুধু মাস্টার্স অথবা শুধু পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করা যাবে।
আবেদনের লিংক – https://apply.stipendiumhungaricum.hu/
তারপর, বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনলাইন আবেদনের পাশাপাশি যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মার্কশিট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্রের হার্ডকপিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
অনলাইন আবেদনের লিংক – http://scholar.banbeis.gov.bd/hungary/
সর্বশেষ, অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করার পর আবেদনের কপি সহ প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট নিচের ঠিকানায় জমা দিতে হবে।
প্রাপকের ঠিকানা-
যুগ্নসচিব (বৃত্তি)
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়,
বাংলাদেশ সচিবালয় , ঢাকা।
আবেদনপত্র সচিবালয়ের ২ নং গেট সংলগ্ন অভ্যর্থনা কক্ষের ৯নং কাউন্টারে সকাল ১০.টা থেকে ১১.০০টা এবং বিকাল ৩.৩০টা থেকে ৪.৩০টার মধ্যে জমা দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র :
১। পাসপোর্ট
২। একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং নম্বর পএ
৩। জন্ম নিবন্ধন অথবা এনআইডি
৪। রিকমেন্ডেশন লেটার (২ টি)
৫। মোটিভেশান লেটার
৬। সিভি
৭। মেডিকেল সার্টিফিকেট
৮। এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৯। আইইএলটিএস স্কোর (ভার্সিটির রিকোয়ার্মেন্ট অনুযায়ী)
হাঙ্গেরির সেরা বিশ্বাবদ্যালয়
১। Semmelweis University
২। Eötvös Loránd University
৩। University of Pécs
৪। University of Debrecen
স্কলারশিপটি অন্য অনেক স্কলারশিপের মতো প্রতিযোগিতা পূর্ণ নয়। তাই মোটামুটি রেজাল্ট, আইইএলটিএস স্কোর ভালো থাকলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
লেখাপড়া শেষে অন্য সব ইউরোপীয় দেশের মতো হাঙ্গেরি ও আপনাকে জব খোঁজার ভিসা দিবে।যদি সেই সময়ের মধ্যে জব ম্যানেজ করতে পারেন তবে থেকে যেতে পারবেন।
বি. দ্রঃ শুধু পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের আগে সুপারভাইজারের কাছ থেকে Statement of the Supervisor নিতে হবে। তারপর, আবেদন শুরু করতে হবে।
Discussion about this post