আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কোভিড-১৯ ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের লক্ষ্যে জার্মানির ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিয়নটেক টিকা আবিষ্কারে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি পাওয়ার পর ট্রায়াল শুরু করেছে।
বিয়নটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জানিয়েছেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে অনুমোদন পেলে এ বছরের শেষের দিকে তারা কয়েক লাখ ডোজ টিকা উৎপাদন করতে পারবেন।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
গোটা বিশ্বে গবেষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে করোনা ভাইরাসের টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন টিকা আবিষ্কার হলে করোনা ভাইরাসের মহামারি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৮০টি এমন প্রকল্প চলছে। মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে কয়েকটি ক্ষেত্রে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এ প্রথম জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানও সেই প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি পেয়েছে।
ফেডারেল স্তরে প্রতিষেধক ও বায়োমেডিসিন কর্তৃপক্ষ পাউল-এয়ারলিশ ইনস্টিটিউট বা পিইআই বুধবার(৬মে) বিয়নটেক নামে এক কোম্পানিকে সেই অনুমতি দিয়েছে।
পিইআই জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় নিরাপদ ও কার্যকর টিকা তৈরির পথে মানুষের ওপর পরীক্ষা জার্মানি ও অন্য দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সম্ভাব্য এ টিকার উপাদানের কার্যকরিতা ও ঝুঁকি পরীক্ষা করেই এমন অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে গোটা বিশ্বে বিশেষ এ প্রতিষেধকের কার্যকারিতা নির্ণয় করতে চতুর্থ পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
বিয়নটেক কোম্পানির সূত্র অনুযায়ী, ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সি ২০০ সুস্থ স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এ টিকা পরীক্ষা করা হবে। বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে বিয়নটেক টিকা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরের জন্য আরএনএ বা জিনভিত্তিক সম্ভাব্য এ টিকা কতটা উপযুক্ত ও নিরাপদ, তা পরীক্ষা করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের ওপরেও পরীক্ষা চালানো হতে পারে। এক্ষেত্রে প্যাথোজেনের জিন সম্পর্কে তথ্যের ভিত্তিতে শরীরে বিশেষ ধরনের প্রোটিন উৎপাদন করা হচ্ছে। এ প্রোটিনের কল্যাণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ প্রণালী উপযুক্ত অ্যান্টিবডি সৃষ্টি করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তখন ভাইরাস সেই মানুষকে সহজে কাবু করতে পারবে না।
বিয়নটেক কোম্পানি মূলত ক্যানসারের রোগীদের জন্য ইমিউনোথেরাপি নিয়ে কাজ করে চলেছে।
সিইও উগুর সাহিন মনে করেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণে টিকার অনুমোদন ঐতিহাসিক দ্রুততার সঙ্গে মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, মহামারি পরিস্থিতিতে টিকার উপকারিতা অপরিসীম। মহামারি পরিস্থিতিতে টিকার অনুমোদন অতীতের পদ্ধতির চেয়ে ভিন্ন হতে পারে।
উগুর সাহিন জানান, অনুমোদন পেলে বিশ্বের মানুষের কাছে টিকা যত দ্রুত সম্ভব পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন তারা।
Discussion about this post