বিশেষ প্রতিবেদক
স্কুল. কারিগরি, মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষার্থীদের জন্য আরও তিন-চার মাস সংসদ টিভিতে ক্লাস সম্প্রচারের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।সংসদ টিভি দেশের অনেক জায়গায় দেখা য়াচ্ছেনা, ক্লাসগুলোতে সরাসরি প্রশ্ন করা যায়না এমন অভিযোগও আছে। তবু করোনাবন্ধ বাড়লে শিক্ষা সচল রাখার এটাই বড় উপায়। বছর ফুরোবার আগে সিলেবাস শেষ করার ইচ্ছা রয়েছে শিক্ষা কর্তৃপক্ষের। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন এখন কোনমতেই সম্ভব নয়! শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অনেকে এই ক্লাসগুলোকেই এখন একমাত্র ভরসা মানছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকার বলেছে, ঝুঁকি অব্যাহত থাকলে এই ছুটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়াতে পারে। শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ বলেছেন, করোনাকাল লম্বা হলে দেশজুড়ে পড়াশোনা চালু রাখার জন্য টিভির ক্লাসগুলো তাদের সবচেয়ে বড় সহায়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা যেন ফোনে শিক্ষকের পরামর্শ নিতে পারে, সেটার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষা প্রশাসন ২৯ মার্চ থেকে মূলধারার মাধ্যমিক এবং ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিক স্তরের সব বিষয়ে ক্লাস রেকর্ড করে সংসদ টিভিতে দেখানো শুরু করেছিল। এখন আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা যুক্ত হয়েছে।দাখিলের পর আলিয়া ধারার মাদ্রাসার ক্লাস যুক্ত হতে যাচ্ছে। দেশে এখন প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় পৌনে দুই কোটি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৩৪ লাখের মতো শিক্ষার্থীর জন্য ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে।উচ্চিমাধ্যমিক শ্রেণরি জন্যও ক্লাস চলছে কিশোর বাতায়নে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (প্রশিক্ষণ) প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের দিয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৫০০টি ক্লাস রেকর্ড করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেগুলোর ২০০-এর বেশি প্রচারিত হয়েছে। আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসি উল্লাহ বলেন, এ পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ের ক্লাস হয়েছে এক শর মতো।লকডা্উন ও রমজানের কারণে কিছু সমস্যা হলেও আরও ক্লাস আসছেে। ইতোমধ্যে ক্লাসগুলোর সুফল পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
তবে মাউশির সুত্রে জানা গেছে, টিভি দেখার সুযোগ না থাকায় ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এই ক্লাসগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। টিভি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিবিষয়ক সরকারের এটুআই প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে তাঁরা এ ধারণা পেয়েছেন। তাই ফোনে বিশেষ নম্বর বা এ্যাপসের মাধ্যমে পাঠদানের ব্যবস্থাও হচ্ছে।
ঢাকার কিছু নামী স্কুল নিজেদের মতো করে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, তাঁরা ফেসবুকে গ্রুপ খুলে চতুর্থ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাচ্ছেন। প্রশ্নোত্তরের সুযোগ থাকছে। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পড়ার কাগজ ও বাড়ির কাজ দেওয়া হয়েছে, টিভির ক্লাস দেখতে বলা হয়েছে।
স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষা প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সামনে মাধ্যমিকের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষাও আটকে যেতে পারে। মাউশি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ঢাকা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্কুল খুললে সিলেবাস কাটছাঁট করে কিছু পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
Discussion about this post