অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে গবেষণা, টিকা তৈরি ও চিকিৎসায় বিশ্বনেতাদের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। তবে তিনি বলেছেন, ‘আমরা কত দ্রুত ও কত কার্যকর এ ব্যবস্থা করতে পারব, সেটা বিষয় নয়। বিষয় হলো, কতটা সুষমভাবে আমরা তা বণ্টন করতে পারব। আমরা কেউ এমন পৃথিবী মেনে নিতে পারি না, যেখানে কিছু মানুষ সুরক্ষিত, সবাই নয়। সবাই সুরক্ষিত না হলে কেউই নিরাপদ নয়।’
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে গত সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। এ সময় তিনি বলেন, করোনা শনাক্তকরণ পদ্ধতি, চিকিৎসা ও প্রতিষেধক উদ্ভাবনে সহায়তা দিতে ও সমহারে বিতরণ নিশ্চিত করতে ১০ দিন আগে (ফ্রান্সের) প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, (ইউরোপীয় কমিশনের) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন, মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি উদ্যোগ নিয়েছে। সে উদ্যোগে এখন ৪০টি দেশের নেতারা যুক্ত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, করোনার প্রতিষেধক, শনাক্তকরণ পদ্ধতি ও চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের গবেষণায় সোমবার পর্যন্ত ৭৪০ কোটি ইউরো তহবিলের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এটি বৈশ্বিক সংহতির একটি শক্তিশালী ও অনুপ্রেরণাদায়ী প্রদর্শন।
তেদরোস আধানোম বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির অব্যাহত বিস্তার একটা জিনিসই দাবি করে, সেটা হলো এই গ্রহের প্রত্যেক মানুষকেই এই রোগ থেকে সুরক্ষিত হতে হবে। তিনি বলেন, একক হুমকি মোকাবিলায় পুরো বিশ্বের একজোট হয়ে লড়াই করার এটাই সুযোগ। শুধু তা-ই নয়, এই পরিস্থিতি সবার জন্য অভিন্ন এক ভবিষ্যতেরও হাতছানি দিচ্ছে, যেখানে সব মানুষই সর্বোচ্চ মানদণ্ডের স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, সুরক্ষিত থাকার খুব সাধারণ একটি কৌশলই এখন সেরা কৌশল। সেটা হলো, হাত পরিষ্কার করা। হাত ধোয়ার এই অভ্যাস জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
এ সময় তেদরোস আধানোম তড়িঘড়ি লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু দেশ এখন তথাকথিত লকডাউন ও ঘরে থাকার নির্দেশ শিথিল করতে শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের মূল যে পদক্ষেপগুলো, যেমন হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মেনে চলা—এসব শিথিল করা যাবে না। (মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে) গৃহীত পদক্ষেপও (রোগীর সন্ধান, পৃথক্করণ, পরীক্ষা ও সব রোগীর চিকিৎসা) শিথিল করা যাবে না।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, কিছু দেশে নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে। কিন্তু অন্য দেশগুলোয় এই সংখ্যা বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাস আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকবে এবং একে পরাজিত করতে আমাদের একজোট হয়ে উপকরণ তৈরি ও বণ্টন করতে হবে।’
তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘আমার বন্ধু বরিস জনসন আজ (সোমবার) যেমনটা বলেছেন যে আমরা এই লড়াইয়ে একসঙ্গে আছি এবং আমরা একসঙ্গে চেষ্টা করে যাব। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমিও বলছি, আমরা জাতীয় ঐক্য ও বৈশ্বিক সংহতির মাধ্যমে একসঙ্গে লড়াই করে যাব। এই ভাইরাসের প্রতিষেধক হলো জাতীয় ঐক্য ও বৈশ্বিক সংহতি। এই ভাইরাসের প্রতিষেধক মানবিক চেতনা।’
Discussion about this post