নিউজ ডেস্ক
করোনা পরিস্থিতিতে কাজ বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি অসহায় হয়ে পড়েছেন দেশের প্রান্তিক মানুষ। বেকায়দায় পড়া গরীব, অসহায় এ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে সরকার। কিন্তু এর মাঝেও দেশব্যাপী নানা জায়গায় সরকারি ত্রাণের চাল চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। হাতেনাতে ধরা পড়ছেন অনেক ত্রাণ আত্মসাৎকারী।
স্থানীয় অনেক ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে এ ইস্যুতে বরখাস্তও করা হয়েছে। তারপরও পুরোপুরি থামানো যাচ্ছে না ত্রাণ সংক্রান্ত দুর্নীতি। এ প্রেক্ষাপটে ত্রাণ কাজে স্বচ্ছতা আনতে সরকার আইসিটি বিভাগের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করতে চলেছে ।
এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মে মাসেই ৫০ লাখ পরিবারে ২০ কেজি করে, ১০ লাখ কেজি চাল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এবারে এই চাল বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতে কিউআর (কুইক রেসপন্স) কার্ড দেওয়া হবে। এ কার্ডের সফটওয়্যার ডেভলপ করছে আইসিটি বিভাগ। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জেলা প্রশাসক, ইউএনও, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় ৫০ লাখ পরিবার চিহ্নিত করার কাজও চলমান।
সূত্র জানায়, গত ২৮ এপ্রিল থেকে ত্রাণের প্রকৃত সুবিধাভোগি শনাক্তের কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারের (৭ মে) মধ্যে ৫০ লাখ পরিবারের তথ্য আইসিটি বিভাগে পৌঁছে যাবে। সামনের সপ্তাহে এসব পরিবারকে কিআর কার্ড দেওয়া হবে।
‘ডিজিটাল কিআর কার্ডে কিছু তথ্য থাকবে। নাম, খানা প্রধানের (পরিবার) নাম, খানায় সদস্য সংখ্যা, জন্ম তারিখ, ছবি, মোবাইল নম্বর ও ভোটার আইডি কার্ড। কার্ড ছাড়া কেউ চাল পাবে না। কার্ড দেখালে সব তথ্য ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। ফলে একজনের চাল অন্যজন নিতে পারবে না। চাল দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এন্ট্রি হয়ে যাবে। এই কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকেও পর্যবেক্ষণ করা যাবে।’
এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (ত্রাণ-১) আবুল খায়ের মোহাম্মদ মারুফ হাসান বলেন, এর আগে চাল বিতরণে সমস্যা হয়েছে। তাই স্বচ্ছতার মাধ্যমে চাল বিতরণে কিউআর কার্ড আসছে। এতে করে একজনের চাল অন্যজন নিতে পারবে না। প্রকৃত ব্যক্তির হাতেই ২০ কেজি করে চাল চলে যাবে। ডাটা সংগ্রহের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলমান করোনা সংকটে দেশে এরই মাঝে সরকারের পক্ষ হতে ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৬৭ মেট্রিক টন চাল ও পেঁয়াজ বিতরণ করা হয়েছে। এর বাজার মূল্য প্রায় ৫২ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এছাড়া অসহায় পরিবারগুলো যাতে শিশুখাদ্য কিনতে পারে সে জন্য ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ পেয়েছে ১ কোটি ২৫ হাজার পরিবার। এছাড়া ৭৬ হাজার পরিবার নানা ধরনের খাদ্য কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।
Discussion about this post