প্রযুক্তি ডেস্ক
ইদানীং নানাভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। অনেক অসাধু ব্যক্তি শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে জনসমক্ষে প্রকাশ করছে বা প্রকাশ করার হুমকি দিচ্ছে! এতে নাগরিকদের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক। অনেকেই ছুটছেন আইটি বিশেষজ্ঞদের কাছে। জানতে চাচ্ছেন তার এনআইডি বা ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত আছে কিনা। এ বিষয়ে দেশের প্রচলিত বা বিশেষ আইনে কী আছে।
এ বিষয়ে ২০১১ সালে প্রণীত তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইনে বলা হয়েছে, ব্যক্তির কোনো ধরনের তথ্য কেউ যদি বেআইনিভাবে প্রকাশ করে তাহলে তা অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আইনের মাধ্যমে প্রতিকার পাবেন।
ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা বিষয়ে এ সংক্রান্ত আইনে আরও বলা হয়, জনস্বার্থের বিষয় না থাকলে ব্যক্তির কোনো ধরনের তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি দণ্ডবিধির বিধান অনুসরণ করে এ সংক্রান্ত অপরাধ অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এতে আরও বলা হয়, মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রকাশকারীকে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
অর্থদণ্ডের অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে জরিমানা হিসাবে প্রদান করা হবে। মিথ্যা তথ্য প্রকাশকারী যদি সরকারি কর্মকর্তা হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে উল্লিখিত দণ্ড ছাড়াও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে আইনে বলা হয়। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ১৭, ১৮, ১৯ এবং ২০ ধারায় তথ্য পাচার, চুরি, তথ্যভান্ডারে প্রবেশ, তথ্য ভান্ডারের ক্ষতিসাধন, ক্ষতিসাধনের চেষ্টা, একই অপরাধের পুনরাবৃত্তির অপরাধের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
২০১১ সালের তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইনের ৯ ধারায় বলা হয়েছে, মিথ্যা জেনেবুঝে বা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত না হয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করলে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো ভিত্তিহীন তথ্য প্রকাশ করা বেআইনি। যে তথ্যের ভিত্তিতে এই আইনের অধীন তদন্ত বা বিচারকার্য পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তিনি মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে গণ্য হবেন।
নাগরিকের গোপনীয় কোনো তথ্য প্রকাশকারী ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন এবং ওই অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ২ বছর, অনধিক ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তথ্য প্রকাশকারী কোনো সরকারি কর্মকর্তা হলে এবং তিনি কোনো মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড ছাড়াও বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তবে কারাদণ্ড নির্ধারণ করা হলেও অর্থদণ্ডের পরিমাণ অর্থাৎ কত টাকা অর্থদণ্ড করা হবে সে বিষয়ে আইনের কোথাও কোনো উল্লেখ নেই।
আইনের ১০ ধারায় বলা হয়েছে, জনস্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন তথ্য মিথ্যা জেনে বা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত না হয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করলে, যে তথ্যের ভিত্তিতে এই আইনের অধীন তদন্ত বা বিচারকার্য পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তিনি মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে গণ্য হবেন। কোনো তথ্য প্রকাশকারী কোনো মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন এবং ওই অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ২ বছর বা অনধিক ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
Discussion about this post