অনলাইন ডেস্ক
সম্প্রতি বাংলাদেশের দুই অভিযাত্রী এম এ মুহিত এবং কাজী বিপ্লব নেপালে হিমালয়ের ২০ হাজার ৩০০ ফুট উঁচু দুর্গম চূড়া ‘ফার্চামো’তে সফলভাবে আরোহণ করেছেন।
গত ৩ নভেম্বর (শুক্রবার) সকাল ৯টায় ‘ফার্চামো’ পর্বতচূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেন তারা।
তবে অভিযাত্রী দলের আরেক সদস্য নুরুননাহার নিম্নি অসুস্থতাজনিত কারণে আরোহণ সম্পন্ন করতে পারেননি।
অভিযান সম্পর্কে দলনেতা এম এ মুহিত বলেন, ২৬ অক্টোবর আমরা রামেছাপ এয়ারপোর্ট থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে প্লেনে চড়ি। ওইদিনই আমরা পৌঁছাই এভারেস্ট অঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত হিলারি তেনজিং এয়ারপোর্টে। যেটি একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক বিমানবন্দর হিসেবেও কুখ্যাত। ওইদিন আমরা ট্রেকিং শুরু করি। বিকেলে পৌঁছাই মঞ্জো। ২৭ অক্টোবর আমরা যাই নামচে বাজার। পরদিন ২৮ অক্টোবর ছিল বিশ্রাম। ২৯ অক্টোবর পৌঁছাই থামে। ৩০ অক্টোবর ছিল বিশ্রামের। ৩১ অক্টোবর যাই থ্যাংবো। ১ নভেম্বর আমরা চার হাজার ৮০০ মিটার উঁচু বেজক্যাম্প পৌঁছাই।
২ নভেম্বর আমরা ৫ হাজার ৭০০ মিটার উঁচু তাশি ফুক হাই ক্যাম্পে যাই। হাইক্যাম্প থেকে ১০০ মিটার নিচে দলের এক সদস্য নিম্নির শরীর খারাপ লাগা শুরু হয়। প্রধান শেরপা দাওয়া তেনজিং তাকে নিয়ে ফিরে যান। চিরিং ওয়াংচু শেরপা, ফুর কাঞ্চা শেরপা আমাদের নিয়ে হাই ক্যাম্পে যান। হাইক্যাম্প পৌঁছাতে দুপুর হয়ে যায়। দিবাগত রাতে অর্থাৎ ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৩টায় হেডটর্চের আলোয় আমরা চূড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আধা ঘণ্টা পর ক্র্যাম্পন পয়েন্টে পৌঁছাই।
ওই সময় তেমন বাতাস ছিল না। মেইন রোপে দেড় ঘণ্টা থাকি। তাশি লাপচা পাসকে ডানে রেখে আমরা এগিয়ে যেতে থাকি। দিগন্তে ভোরের লাল আভা দেখার সময় ফ্রিক্সড রোপে আমরা জুমার লাগিয়ে আরোহণ শুরু করি। তিনটি কঠিন জায়গায় ১০০ মিটার দড়ি লাগানো ছিল। সে জায়গাগুলো ৮০ থেকে ৯০ ডিগ্রি খাড়া ছিল। ৬টার সময় জুমার শুরু করি যা শেষ হয় সকাল ৯টার দিকে সামিটে পৌঁছে। চূড়ায় আমরা উড়িয়ে দেই বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা।
চূড়া আরোহণের পরবর্তী সময় নিয়ে তিনি বলেন, পা রাখার আগেই প্রচণ্ড বাতাস শুরু হয়। চূড়ায় ১৫ মিনিটের মতো ছিলাম। মনে হচ্ছিল সব জমে যাবে। হাইক্যাম্পে আসতে আসতে পৌনে ১১টা বেজে যায়। ওইদিনই বেজক্যাম্প হয়ে বিকেল ৫টায় থ্যাংবো চলে আসি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পর্বতারোহী দল গত ২৪ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে। ২০ হাজার ৩০০ ফুট উঁচু ‘ফার্চামো’ পর্বতশিখর এভারেস্ট-এর দক্ষিণ-পশ্চিমে নেপালের রোলওয়ালিং হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত। এ অভিযানের দলনেতা এম এ মুহিত দুইবার এভারেস্ট আরোহণ করেছেন। এই ‘ফার্চামো’ পর্বতশিখর অভিযানটি পরিচালনা করছে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব (বিএমটিসি)।
Discussion about this post