শিক্ষার আলো ডেস্ক
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো প্রবর্তন করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’। আর এ পদে প্রথম মনোনয়ন পেয়েছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫২তম সিন্ডিকেট সভায় ড. রশিদকে বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে মনোনয়ন প্রদান করা হয়।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) সভার সিদ্ধান্তক্রমে রোববার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
ড. রশিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বিএ (অনার্স) ও এমএ উভয় পরীক্ষায় প্রথম স্থান পেয়ে ১৯৮৩ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের রিউকোকু বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন। তিনি সিলেকশন গ্রেড অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেন।
ড. হারুন-অর-রশিদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই মেয়াদে সফলভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ছিলেন তিনি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তিনবার নির্বাচিত ডিন, স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সর্বশেষ জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ চেয়ারে ‘বঙ্গবন্ধু প্রফেসরিয়াল ফেলো’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বঙ্গবন্ধু গবেষণায় ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১’ অর্জন করেন। ২০১৬ সালে বেস্ট পাবলিকেশনসের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ স্বর্ণপদক লাভ করেন। এ পর্যন্ত ১৯টি মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। দেশে-বিদেশে জার্নালে তার ১০০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ছয়টি প্রসিদ্ধ বইয়ের সম্পাদনা করেছেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন বিষয়ক ৭টি বইয়ের সম্পাদনা করেছেন।তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা- গ্রন্থ হচ্ছে –Understanding Fifty Years of Bangladesh Politics : Struggles, Achievements and Challenges ( বাংলাদেশের ৫০ বছরের রাজনীতি অনুধাবন : সংগ্রাম, অর্জন ও চ্যালেঞ্জ) নামে নতুন বই। বিশ্বখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা রাউটলেজ লন্ডন ও নিউইয়র্ক থেকে বইটি একযোগে প্রকাশ করছে।
আরও পড়ুন- প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড.উত্তম কুমার
তার গবেষণা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘দ্য ফোরস্যাডোয়িং অব বাংলাদেশ’, ‘ফর্ম ১৯৪৭ পার্টিশন টু বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড স্টেট ফর্মেশন ইন পারসপেকটিভ’, ‘ইনসাইড বেঙ্গল পলিটিক্স’, ‘বাঙালির রাষ্ট্রচিন্তা ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়’, ‘বাংলাদেশ: রাজনীতি, সরকার ও শাসনতান্ত্রিক উন্নয়ন ১৭৫৭-২০০০’, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পুনর্পাঠ’, ‘আমাদের বাঁচার দাবি: ৬ দফার ৫০ বছর’, ‘মূলধারার রাজনীতি: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ১৯৪৯-২০১৬’, ‘৭ই মার্চের ভাষণ কেন বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পদ: বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ’, ‘বঙ্গীয় মুসলিম লীগ পাকিস্তান আন্দোলন: বাঙালির রাষ্ট্রভাবনা ও বঙ্গবন্ধু’, ‘বাংলাদেশ: গভর্নেন্স, পলিটিক্স, কনস্টিটিউশনাল ডেভেলপমেন্ট ১৭৫৭-২০১৮’, ‘৭ই মার্চ থেকে স্বাধীনতা’, ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব কী ও কেন’, ‘বঙ্গবন্ধুকোষ’, ‘সোহরাওয়ার্দী বনাম বঙ্গবন্ধু’, ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা’ প্রভৃতি।
ড. রশিদ বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে ২০ খণ্ডে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এনসাইক্লোপিডিয়া’ রচনা প্রকল্পের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এনসাইক্লোপিডিয়া’ এর ইংরেজি বই রচনা প্রকল্পের প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।
Discussion about this post