মতিউর তানিফ
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের অংশ হিসেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে দুই দিনব্যাপী শুরু হচ্ছে ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৫.০’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, গবেষক এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে আগামী ৯-১০ ডিসেম্বর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অর্গানাইজিং চেয়ার ও বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আজাদ, ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম শিহাবুদ্দিন, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আমিনুর রহমান, সেন্টার ফর ইন্টান্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর ড. মোল্লা শাহাদাত হোসেন লিপু, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষক সরোজ মেহেদী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর বাংলাদেশ ছাড়াও কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, চীন, ইরান, ভারত ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন গবেষকরা অংশ নেবেন। সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৯৩টি গবেষণা প্রবন্ধ জমা পড়েছে; যা থেকে ১১৯টি প্রবন্ধ নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মোট ২২টি প্রবন্ধ জমা পড়েছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা, এসব প্রবন্ধ ভবিষ্যতে জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ নানা ধরনের কাজে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন-দুই ক্যাটাগরিতে মাভাবিপ্রবির ৬৩১ শিক্ষার্থী পাচ্ছেন ৩০ লাখ টাকা বৃত্তি
সম্মেলনের অর্গানাইজিং চেয়ার অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আজাদ বলেন, বৈশ্বিক ইন্ডাস্ট্রি ১.০ থেকে ২.০ আসতে যেখানে দুই শ’ বছর সময়ে লেগেছে; সেখানে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ থেকে ৫.০-এর মাঝের ব্যবধান ছিল মাত্র ১০ বছর। তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে অনেক ধরনের গবেষণা হয়, কিন্ত অনেক ক্ষেত্রেই তা শেষ পর্যন্ত কাজে আসে না। এসটিআই সম্মেলনকে প্ল্যাটফর্ম ধরে সেই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম শিহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত গবেষণা হলেও মানুষ তা জানে না। সবাই এগিয়ে আসলে এই গবেষণাগুলোর সদ্বব্যহার সম্ভব। তিনি বলেন, আমাদের মানহীন হাজারো গবেষণার চেয়ে ভালো মানের একটি গবেষণাই একটি দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। আমাদের সেভাবেই কাজ কাজ করতে হবে।
সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আমিনুর রহমান বলেন, পঞ্চমবারের মত আয়োজিত এই এসটিআই শুধু সম্মেলনে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বিভিন্ন নীতিনির্ধারণে অংশ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। আগামীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এই অনুষ্ঠান শিল্প বিপ্লবের অঙ্গণে প্রথম সারির সম্মেলন হিসেবে রূপ পাবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেজেন্টেশনে ড. মোল্লা শাহাদাত হোসেন লিপু সম্মেলনের জমা পড়া প্রবন্ধ ও এর ধরনসহ নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
আয়োজক কমিটি জানান, সম্মেলনে মূলত তিনটি পৃথক ট্র্যাক প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে রয়েছে- ইন্টেলিজেন্ট কম্পিউটিং, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিকিউরিটি সিস্টেমস; এনার্জি, রোবটিক্স, ইলেক্ট্রনিক্স, সেন্সরস অ্যান্ড কমিউনিকেশন এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। সম্মেলনে উপস্থাপিত মোট ৩টি প্রবন্ধ ও পোস্টার পেপার প্রেজেন্টেশন ‘বেস্ট পেপার’ হিসেবে নির্বাচিত হবে। পরে বাছাইকৃত সব প্রবন্ধ আইইইই এক্সপ্লোর ডিজিটাল লাইব্রেরিতে স্থান পাবে।
বক্তারা বলেন, এসটিআই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো- শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষক ও অনুশীলনকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা। যেখানে গবেষণাপত্র উপস্থাপন, নতুন আইডিয়া তৈরি, সাসটেইনেবল টেকলোজির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে। যা মূলত শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
Discussion about this post