শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ধারণ করার লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নগরীর অন্যতম সুপরিচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ ইনস্টিটিউট অফ গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (আইজিএমআইএস)-এ বসন্তবরণ ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।সুন্দর এই আয়োজনটি করেছে কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন আইজিএমআইএস স্টুডেন্টস ডেভলপমেন্ট ক্লাব (ISDC) ।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে কলেজ অধ্যক্ষ এস.এম. জাকির হোসেন বলেন, বসন্ত ও পিঠাপুলির সাথে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অনুষঙ্গ। নগর জীবনের প্রভাবে আজ আমরা ভুলতে বসেছি গ্রামীণ ঐতিহ্য পিঠা , পায়েস , পুলির কথা। আর আমাদের এই অতীত ঐতিহ্যকে তরুণদের কাছে তুলে ধরতে এই আয়োজন।
প্রধান অতিথি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, বাঙ্গালী জাতি কোন লুটেরা বা শোষক জাতি নয়।অন্য কারও সভ্যতা লুন্ঠন করেও তারা বেড়ে ওঠেনি! আমাদের রয়েছে নিজস্ব কৃষ্টিতে তিল তিল করে গড়ে ওঠা সমৃদ্ধ এক ইতিহাস এবং গৌরবময় এক ঐতিহ্য।সেই সভ্যতার এক নান্দনিক প্রকাশ হলো আজকের এই বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব।বিজাতীয় সংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে আইজিএমআইএস কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মননশীল এই আয়োজনকে স্বাগত জানাই।
বিশেষ অতিথি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, চট্টগ্রামের উপপরিচালক ড. আতাউর রহমান বলেন, বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতিতে ভাতের পরে এককভাবে যে খাবারটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয় সেটি পিঠা।প্রাচীন বইপুস্তকে যেহেতু পিঠা বানানো ও খাওয়ার কথা এসেছে, তাই ধরে নেওয়া যায় পিঠা খাবার ঐতিহ্য বাঙালি সমাজেও অনেক প্রাচীন।তাই তোমরা যারা এই ঐতিহ্যকে লালন করে এই উৎসবের আয়োজন করেছো তারা সত্যিই স্পেশাল! আমাদের উচিত পিঠাসহ দেশের সকল ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা। দেশকে জানতে হলে আমাদের শেকড়কে বুঝতে হলে ঐতিহাসিক স্থাপনা ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলো সংরক্ষণ ও দর্শন করতে হবে। আর সে দায়িত্ব তোমাদের মতো তরুণদেরই নিতে হবে।
শিক্ষার আলো পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক এস. এম.পারভেজ বলেন, শিক্ষা লাভ মানে শুধূ বইপড়া আর পাশ করা নয়! যে শিক্ষার সাথে সংস্কৃতির সম্পর্ক নেই , যে শিক্ষা সৃজনশীলতার জন্ম দেয়না সেটি প্রতিবন্ধী শিক্ষা।এই ধরণের শিক্ষা জীবনে কখনই সফলতা বয়ে আনবেনা।তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি শিল্প ও সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে।
আলোচনা শেষে অতিথিরা পিঠাপুলির স্টল ঘুরে দেখেন এবং আয়োজকরা তাদের আপ্যায়ন করেন। পাটিসাপটা, পোয়া, মালপোয়া, হরেক রকমের পুলিপিঠা, নকশি পিঠা, দুধ চিতই, গোলাপ পিঠা, খিরসা পুলি, ফুল পিঠা, ঝাল পিঠা, সন্দেশ, জামাই পুলি, মোরগ পিঠা, সুন্দরী পাকন, মালাই পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, খেজুর কিন্নি, চিকেন নাগেট প্রভৃতি হরেক স্বাদের পিঠা সবাইকে আপ্লুত করে।
সবশেষে ছাত্রছাত্রীরা নাচ গান ও কবিতার মাধ্যমে বসন্তকে বরণ করে নেয়।সফল এই আয়োজনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ISDC এর সেক্রেটারী মোহাম্মদ ইরামুল আহমেদ নিলয়, সহসভাপতি সরোজ বড়ুয়া পল্লব, উদয়ন নাথ এবং রবিউল মওলা রকি।
Discussion about this post