২০২১ সালে সাধারণ ছুটি ১৪ দিন। তার মধ্যে ছয় দিন পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শুক্র ও শনিবার। এ ছাড়া আগামী বছর নির্বাহী আদেশে ছুটি আছে আট দিন। তার মধ্যে এক দিন পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে।
আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছুটির এই তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ-সংক্রান্ত তথ্য সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, উল্লিখিত ছুটি ছাড়াও আগামী বছর বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আলাদা আলাদা ঐচ্ছিক ছুটি আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগামী বছরের জন্য ১৪ দিন সাধারণ ছুটি এবং নির্বাহী আদেশে আটদিন সরকারি ছুটি মিলিয়ে মোট ২২ দিন ছুটি থাকবে। এর মধ্যে সাতদিনের ছুটি শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পড়েছে।
বরাবরের মতো এবারও বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মুসলমানদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি রাখা হয়েছে পাঁচদিন, হিন্দুদের জন্য আটদিন, খ্রিস্টানদের জন্য আটদিন এবং বৌদ্ধদের জন্য পাঁচদিন।’
সাধারণ ছুটি
সাধারণ ছুটির মধ্যে রয়েছে- ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ১ মে মে দিবস, ৭ মে জুমাতুল বিদা, ১৪ মে ঈদুল ফিতর, ২৬ মে বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা), ২১ জুলাই ঈদুল আজহা, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ৩০ আগস্ট জন্মাষ্টমী, ১৫ অক্টোবর দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী), ১৯ অক্টোবর ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন (বড়দিন)।
নির্বাহী আদেশে ছুটি
আগামী বছরের ২৯ মার্চ শবেবরাত, ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ, ১০ মে শবেকদর, ১৩ ও ১৫ মে ঈদুল ফিতরের আগের ও পরের দিন, ২০ জুলাই ও ২২ জুলাই ঈদুল আজহার আগের ও পরের দিন এবং ২৯ আগস্ট আশুরার দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে।
ঐচ্ছিক ছুটি
ঐচ্ছিক ছুটির (মুসলিম পর্ব) মধ্যে রয়েছে- ১২ মার্চ শবে মেরাজ, ১৬ মে ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন, ২৩ জুলাই ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন, ৬ অক্টোবর আখেরি চাহার সোম্বা এবং ১৭ নভেম্বর ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম।
হিন্দুপর্বের ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৬ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পূজা, ২১ মার্চ শিবরাত্রি ব্রত, ২৮ মার্চ দোলযাত্রা, ৯ এপ্রিল মার্চ হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব, ৬ অক্টোবর মহালয়া, ১৪ অক্টোবর দুর্গাপূজা (নবমী), ২০ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা এবং ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজা।
এছাড়া ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ, ১৭ ফেব্রুয়ারি ভস্ম বুধবার, ১ এপ্রিল পুণ্য বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল পুণ্য শুক্রবার, ৩ এপ্রিল পুণ্য শনিবার, ৪ এপ্রিল ইস্টার সানডে এবং ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মোৎসব (বড়দিনের আগের ও পরের দিন) হচ্ছে খ্রিস্টান পর্বের ঐচ্ছিক ছুটি।
ঐচ্ছিক ছুটির (বৌদ্ধপর্ব) মধ্যে রয়েছে- ২৮ জানুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা, ১৩ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তি, ২৩ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা, ২০ সেপ্টেম্বর মধুপূর্ণিমা এবং ২০ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা)।
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও এর বাইরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির মধ্যে রয়েছে- ১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর অনুরূপ সামাজিক উৎসব।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, একজন কর্মচারীকে তার নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে সর্বোচ্চ তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেয়া যাবে। প্রত্যেক কর্মচারীকে বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী নির্ধারিত তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন নিতে হবে। সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির সাথে যুক্ত করে ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেয়া যেতে পারে।
Discussion about this post