খেলাধুলা ডেস্ক
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের সদস্য ছিলেন। এরপর করোনা অনিশ্চিত করে ফেলেছিল সব। মহামারি সামলে ক্রিকেট মাঠে ফেরার পর খেলেছেন এক টুর্নামেন্ট ও ভিন্ন ফরম্যাটের দুই সিরিজ। বঙ্গবন্ধু কাপে যে উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন সেটা ধরে রেখেছেন আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়েও। সবকিছুই শামীম পাটোয়ারিকে দিয়েছে ভিন্ন পরিচিতি, অল্প কয়েক দিনেই।
ওয়ানডে সিরিজে পাঁচ ম্যাচের চারটিতে ব্যাট হাতে নেমেছেন, তিনটিতেই ছিলেন অপরাজিত। এক ফিফটিতে ১৩০ রান করেছেন, স্ট্রাইক রেটটা রেখেছেন ১৩১.৩১। দুই দল মিলিয়ে সেরা দশ রান সংগ্রাহকের ভেতরেই একশর ওপর স্ট্রাইক রেট আছে কেবল একজনের, তৌহিদ হৃদয় রান করেছেন ১১৩.০০ স্ট্রাইক রেটে। ১২ চারের সঙ্গে হাঁকিয়েছেন চার ছক্কা। একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে ১১ বল খেলে ছক্কা হাঁকিয়েছেন চারটি, করেছেন ২৮ রান।
এমন একটা সিরিজের পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত শামীম। ইমার্জিং সিরিজ শেষ করে বাড়ি ফেরার তাড়ার ভেতরই বললেন, ‘অবশ্যই ভালো লাগছে যে সিরিজটা আমরা ভালো মতো শেষ করতে পেরেছি। আমিও মোটামুটি ভালো খেলেছি। এই জন্য নিজের কাছে খুব ভালো লাগছে।’
বাংলাদেশের পাওয়ার হিটারের অভাব সবসময়ের। ভৌগলিক কারণ, খাদ্যভাস সবকিছু মিলিয়েই পাওয়ার হিটার দেখা যায় না খুব একটা। শামীমকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দলে সেই অভাব পূরণের যোগ্য একজন হিসেবে ভাবছেন অনেকে। শামীম অবশ্য বলছেন, পাওয়ার হিটিং তার প্রকৃতিগতভাবেই, প্রয়োজনের সময় ইনিংসের হালও ধরতে পারবেন তিনি।
‘আসলে পাওয়ার হিটিং আমার প্রকৃতিগতভাবেই ভাবতে গেলে, আল্লাহর রহমতে। ইচ্ছা করে করি এমন কিছু না, পাওয়ার হিটিং আমার ভালো লাগে, পছন্দ করি। পরিস্থিতি বুঝি আর কী। পরিস্থিতি যদি ডিফেন্ড করতে বলে, তাহলে সেটাও পারব এই আত্মবিশ্বাস আছে।’
ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংয়ে তৎপরতা, কেউ কেউ তাকে বলছেন, ‘দেশসেরা ফিল্ডার’। সঙ্গে অফস্পিনটা শামীম করতে পারেন ভালোই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বোলিংয়ে সুযোগ পাননি ততটা। পাঁচ ওয়ানডেতে করেছেন ১৬ ওভার, ৪.৪৩ গড়ে রান দিয়ে অবশ্য নিয়েছেন এক উইকেটও। একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও তিন ওভারে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছেন এক উইকেট।
তবুও বোলিংটা কি আরেকটু ব্যবহার হতে পারত? শামীম বলছেন তার কাছে দলের সিদ্ধান্তই মুখ্য, ‘আমি সবকিছুই উপভোগ করি। পার্ট টাইম বোলিং করি, ফিল্ডিংও করি। অনেক সময় কম্বিনেশনের কারণে বোলিং করতে হয় না। এই নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। যখন দল মনে করবে আমাকে দরকার, তখন বল করবো। এখানে আক্ষেপের কিছু নাই।’
হাই পারফরম্যান্স দলের হয়ে অনুশীলন করেছেন অনেকদিন। কোচ টবি রেডফোর্ডের পরিশ্রমের ছাপ পড়ছে ওই দলের অনেকের মধ্যেই, দেখা যাচ্ছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। এইচপির অনুশীলন কাজে দিলেও শামীম জানিয়েছেন, রেডফোর্ডের সঙ্গে আলাদাভাবে কোনো কিছু নিয়ে কাজ করেননি।
‘আসলে তেমন কিছু না। অবশ্যই অনুশীলনে ছিলাম এটা আমাদের খুব উপকার হয়েছে। বিশ্বকাপের পর এইচপিতে ছিলাম। অনুশীলন করেছি, কঠোর পরিশ্রম করেছি আমরা সবাই। অবশ্যই এটা সাহায্য করেছে, করাটাই স্বাভাবিক। রেডফোর্ডের সঙ্গে এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করিনি। নিজের কাজটা নিজেই করেছি।’
নিজের ফিটনেস কিংবা দুর্বলতা নিয়ে শামীম বলেন, ‘এখন আপাতত দুর্বলতা নিয়ে কাজ করছি না। আবার ক্যাম্প আসুক। তখন এসব নিয়ে কাজ করবো। খাওয়া-দাওয়া মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করছি।’
নিজেকে কবে জাতীয় দলে দেখেন এমন প্রশ্নের জবাবে সোজাসুজি দিলেন না শামীম। তবে আগের রঙিন পোশাকে সুযোগ পাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়ে রেখেছেন তিনি, ‘এটা তো আসলে বলা যায় না। ওটার জন্যই তো এত কষ্ট করতেছি। প্রথমে ওয়ানডে আর পরে টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে দেখতে চাই। এরপর টেস্ট।’
Discussion about this post