খেলাধুলা ডেস্ক
এলিটা কিংসলের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের খবর ইতোমধ্যে পেয়েছেন মামুনুল-জামালদের সাবেক ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। এলিটার বাংলাদেশি হওয়ার ঘটনাকে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন জাতীয় দলের সাবেক কোচ, ‘মিডিয়া ও বাংলাদেশের ফুটবল সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে বিষয়টি আমি জেনেছি। এই খবরটি জেনে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমার ধারণাটি যে সঠিক ছিল পাঁচ বছর পর সেটি প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।’
২০১৫ সালে ক্রুইফ প্রথম বাফুফেকে প্রস্তাব দেন বাংলাদেশে খেলা বিদেশি ফুটবলারদের নাগরিকত্ব দিয়ে জাতীয় দলে খেলানোর। ক্রুইফের প্রস্তাবে বাফুফে সেই সময় তিন বিদেশি ফুটবলার ঘানাইয়ান সামাদ ইউসুফ, ক্যামেরুনের ইসমাইল বাঙ্গুরা ও নাইজেরিয়ান এনকোচা কিংসলেকে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। পরবর্তীতে নানা জটিলতায় সেটি হয়নি।
নাইজেরিয়ান এলিটা কিংসলে ২০১৩ সালে বাংলাদেশি মেয়েকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে নিজেই চেষ্টা করেন বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার। কিছুদিন আগে সফল হন। এলিটার এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন ক্রুইফ, ‘আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম ফেডারেশনকে। ফেডারেশন কিছুটা উৎসাহী হয়ে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখানে সে নিজ উদ্যোগে এত কঠিন কাজ করেছে। এটা আসলেই অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’
শুধু বিদেশি ফুটবলারকে নাগরিকত্ব দেয়ার ধারণা নয়, বাংলাদেশি প্রবাসীদের জাতীয় দলে খেলার জার্সির দুয়ার দেখিয়েছেন ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের বর্তমান অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার অভিষেক হয় ২০১৩ সালে ক্রুইফের কোচিংয়েই। বাংলাদেশি প্রবাসী ও বিদেশি নাগরিকত্ব পরিবর্তনের সংমিশ্রণে বাংলাদেশের সাফল্য নিহিত দেখছেন এই কোচ, ‘জামালকে আমি সুযোগ দিয়েছি। সে এখন জাতীয় দলের অধিনায়ক। জামাল, এলিটার মতো আরো দুই তিনজন প্রবাসী ও নাগরিকত্ব পরিবর্তন করা কয়েকজন খেললে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হতে সময় লাগবে না।’
প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশি নাগরিকত্বের পাশাপাশি স্থানীয় ফুটবলারদের উপরও ভরসা রাখার অনুরোধ ক্রুইফের, ‘বাংলাদেশের ফুটবলাররা কিন্তু মেধাবী। ভালোই খেলছে। বিশেষ করে টুটুল হোসেন বাদশারা তো এখন প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার। ওদের তো আমি ও রেনেই বের করে এনেছি। বাংলাদেশের মেধাবী ফুটবলারদের সঙ্গে দুই জন প্রবাসী ও আর দুই জন নাগরিকত্ব নেয়া ফুটবলার যোগ হলে দুর্দান্ত এক দেশ হবে বাংলাদেশ।’
নাগরিকত্ব পরিবর্তন করে অন্য দেশের হয়ে খেলার উদাহরণ সারা বিশ্বে অভাব নেই। তবে বাংলাদেশে এমন ঘটনা নেই। এক্ষেত্রে কোচকে কৌশলী ভূমিকায় থাকার পরামর্শ দিলেন , ‘আমাদের হল্যান্ডে ও ইউরোপে নাগরিকত্ব পরিবর্তন করে খেলা কোনো বিষয়ই নয়। আমাদের সংস্কৃতি এ রকমই। বাংলাদেশের সংস্কৃতি একটু ভিন্ন। সেখানে কোচকে লোকাল, প্রবাসী ও নাগরিকত্ব পাওয়াদের ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বুঝে এক সূতোয় গাঁথতে হবে।’
২০১২-১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কোচের দায়িত্বে ছিলেন ক্রুইফ। চার বছর পার হলেও বাংলাদেশের ফুটবলের যথেষ্ট খোঁজ খবর রাখেন এই ডাচ কোচ। সুযোগ পেলে আবার বাংলাদেশে কোচিংয়ে আসতেও চান তিনি।
Discussion about this post