মোস্তাকিম আহমেদ সোহান
১৯৯৯ সালের সিডনির অধীনস্থ ক্রিকেট ক্লাব নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ক্লার্কের। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তার অসামান্য প্রতিভার জন্য তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট একাডেমির বিশেষ বৃত্তিপ্রাপ্ত ক্রিকেটার ছিলেন।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪০ এর নিচে এভারেজ থাকলেও অস্ট্রেলিয়া টিমে স্টিভ ওয়াহর জায়গা পূরণ করতে টেস্ট টিমে জায়গা পেয়ে যান মাইকেল ক্লার্ক। ভারতের সাথে ব্যাঙ্গালোরে ২০০৪ সালে আরাধ্য ব্যাগি গ্রীন পান ক্লার্ক এবং মাঠে নেমেই করেন বাজিমাত। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই ভারতীয় বোলারদের তাদেরই ডেরায় একরকম তুলোধুনো করে ১৫১ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে জিতাতে সামনে থেকে ভূমিকা রাখেন মাইকেল ক্লার্ক।
একই সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া হারলেও তাদেরকে বিজয়ের সম্ভাবনা দেখানোর কারিগর ছিলেন মাইকেল ক্লার্ক। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে একজন পার্ট টাইম স্পিনার হিসেবে বোলিংয়ে এসে মাত্র ৯ রান খরচে ৬টি উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার করেন ক্লার্ক।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নিজের প্রথম টেস্টেই নিউজিল্যান্ডের সাথে সেঞ্চুরি করে হোম এবং এওয়েতে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা এলিট ব্যাটসম্যানদের তালিকায় নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করেন ক্লার্ক। ২০০৪ সালে অসাধারণ পারফরম্যান্স এর পুরস্কার হিসেবে বছর শেষে জিতে নেন এলান বোর্ডার ট্রফি।
স্বপ্নের মত ক্যারিয়ারের শুরুটা হলেও এক বছরের মাথায়ই ক্রিকেটের চরম বাস্তবতার সামনে পড়েন ক্লার্ক। ২০০৫ এসেজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে বাজে পারফরম্যান্সের দরুণ অসি দল থেকে প্রথমবারের মত বাদ পড়েন ক্লার্ক।
টেস্ট টিমে রিটার্নটা মাইকেল ক্লার্ক পান ডমেস্টিক এবং ওডিআইতে অসাধারণ স্কোরিং ফর্মের জন্য। দলে ফিরেন বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। তবে দলে তার জায়গাটা পাকাপোক্ত করেন ২০০৬/০৭ এসেজে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি সেঞ্চুরি করে টেস্ট টিমে আবারো ফার্স্ট চয়েজ হয়ে যান তিনি।
ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপে চার ফিফটি করে অস্ট্রেলিয়াযে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন করতে অগ্রজ ভূমিকা রাখেন ক্লার্ক।চারটি ফিফটির মধ্যে সেমিফাইনালে সাউথ আফ্রিকার সাথে গুরুত্বপূর্ণ একটি ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস ও ছিল। উল্লেখ্য যে, গ্রুপ স্টেজে নেদারল্যান্ডস এবং এই সাউথ আফ্রিকার সাথেই ৯০ এর ঘরে গিয়ে আউট হন তিনি।
উল্লেখ্য যে ঐ সিরিজের পর থেকেই একটা লম্বা সময় ধরে টেস্ট ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে ১ থেকে ৩ এর মধ্যেই ঘোরাফেরা করেছিলেন ক্লার্ক, তাতেই প্রমাণ হয় ব্যাট হাতে তার ফর্ম।
তবে আর দশটি ক্রিকেটারদের মত মাইকেল ক্লার্কের ক্যারিয়ার ও বিতর্কমুক্ত নয়। নিজের বহুদিনের গার্লফ্রেন্ড এর সাথে সম্পর্কে টানাপোড়েন নিয়ে আর ক্যারিয়ারের শেষদিকে এসে তার আক্রমনাত্নক ক্যাপ্টেনসির জন্য ড্রেসিং রুমে এবং মিডিয়ায় অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। কিন্তু কোনোকিছুর মুখে ভেঙে না পড়ে ক্লার্ক বরং আগলে রেখেছেন সবসময় নিজের দলকে এবং আগের জেনারেশনের চেয়ে অনেক দূর্বল দল নিয়েও জিতেছেন একটি ওয়ার্ল্ড কাপ।
শুভ জন্মদিন, মাইকেল ক্লার্ক!
Discussion about this post