খেলাধূলা ডেস্ক
সাধারণত উইকেটে ব্যাটসম্যানদের প্রায়ই নাচিয়ে ছাড়েন বোলাররা। কিন্তু ব্যাটসম্যান নিজেই ‘ডান্স মুভ’ দেখাচ্ছেন, এমন ঘটনা বিরল। তাসকিন আহমেদ সেই মজার দৃশ্য উপহার দিলেন এবারের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারের টেস্টের দ্বিতীয় দিনে । এরপর দেখা গেল তার রুদ্র রূপও। ব্লেসিং মুজারাবানির মুখোমুখি হলেন, চোখে চোখ রেখে তাকালেন। ছড়াল উত্তাপ। সেই অধ্যায় পেছনে পেলে ব্যাট হাতেই তাসকিন উপহার দিলেন আনন্দময় সময়। দেখা পেলেন মাইলফলকের।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারের টেস্টের দ্বিতীয় দিনে তাসকিন খেলেছেন ৭৫ রানের দারুণ ইনিংস।
টেস্টে তার আগের সর্বোচ্চ ৩৩। শুধু টেস্ট ক্রিকেটেই নয়, স্বীকৃত ক্রিকেটে ২০৭ ম্যাচ খেলে তিনি ফিফটির স্বাদ পেলেন প্রথমবার।
মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে নবম উইকেটে গড়েছেন দেশের রেকর্ড, একটুর জন্য গড়তে পারেননি বিশ্বরেকর্ড।
তাসকিনের ‘ডান্স মুভ’, ব্যাটিংয়ের আগে একটু দেখিয়েছেন নাচের ঝলক। ছবি: ভিডিও থেকে।
১৩ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিলেন তাসকিন। ব্যাটিং দক্ষতায় উন্নতির প্রমাণ মেলে ধরার আগেই দেখা যায় তার নৃত্য শৈলী। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই মুজারাবানির বলে চোখধাঁধানো এক অফ ড্রাইভে চার মারেন তিনি। পরের বলটি মুজারাবানি করেন শর্ট অফ লেংথ। পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া বল খেলতে গিয়েও ছেড়ে দেন তাসকিন। এরপরই হাত আর শরীর বাঁকিয়ে খানিকটা ‘ডান্স মুভ’ দেখান তিনি। হয়তো বোলারের প্রতি বার্তা, “এরকম বলে আমি আউট হচ্ছি না।”
ইনিংসটি থমকে যেতে পারত ৩২ রানেই। বাঁহাতি পেসার রিচার্ড এনগারাভার বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তাসকিন, কিন্তু সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন মিল্টন শুম্বা।
লাঞ্চের আগে এনগারাভার বলেই সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি ৬৯ বলে। ড্রেসিং রুমের সামনে সতীর্থরা যখন ফেটে পড়ছে করতালিতে, তাসকিনের মুখেও তখন চওড়া হাসি।
লাঞ্চের পর তাসকিনকে ৬৬ থামানোর একটি সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। এবার রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন ডিওন মায়ার্স।
কোনো বোলারই তাকে বিপাকে ফেলতে পারছিল না। এগোচ্ছিলেন তিনি অনায়াসেই। ‘টিপিক্যাল’ লোয়ার অর্ডার ইনিংস এটি ছিল না। বরং তার কিছু শট, অফ সাইডে কিছু নান্দনিক ড্রাইভে মনে হয়েছে যেন তিনি জাত ব্যাটসম্যান!
৭৫ যখন হয়েই গেল, সেঞ্চুরিটাও মনে হচ্ছিল, খুবই সম্ভব।
হলো না, হুট করে নিজেকে হারিয়ে ফেলায়। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তিনি, মিল্টন শুম্বার নিরীহ বাঁহাতি স্পিন পেয়ে মাথা চেপে বসল বড় শটের চিন্তা। সেটাই কাল হলো। স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড।
মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার নবম উইকেট জুটির রান তখন ১৯১। আর চার রান করলেই ছুঁতে পারতেন মার্ক বাউচার ও প্যাটস সিমকক্স জুটির বিশ্বরেকর্ড!
রেকর্ড হলো না। নিজের সেঞ্চুরি হলো না। তার পরও মনে হয় তার আক্ষেপ খুব একটা থাকার কথা নয়। কারণ প্রাপ্তির ঝুলিও যে অনেক ভারী!
Discussion about this post