খেলাধূলা ডেস্ক
আগের দু’বার ফাইনালে পৌঁছে ট্রফি হাতে নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল কেকেআর। আর এবার? তাদের হতাশ করে চতুর্থ শিরোপা ঘরে তুলেছে চেন্নাই সুপার কিংস।ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্ব জিতলেন নিজের চতুর্থ আইপিএল শিরোপা। মহেন্দ্র সিং ধোনি আবারও জানিয়ে দিলেন ক্রিকেটবিশ্বকে আরও অনেক কিছু দেয়ার বাকী রয়েছে তাঁর!
অথচ ১৯৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা কলকাতার উড়ন্ত সূচনায় জয় দেখছিল অনেকে। দুই ওপেনারের ঝড়ে এমনটা ভাবা বিলাসিতা ছিল না। কিন্তু শুবমান গিল ও ভেঙ্কটেশ আইয়ারের বিদায়ের পর মোমেন্টাম হাত ফসকে চলে যায় কলকাতার। ৯১ রানে আইয়ার ফেরেন ৫০ রানে। শার্দুল ঠাকুরের বলে ফেরার আগে ৫ চার ও ৩ ছয়ে চেন্নাইকে শাসন করেছেন। কিন্তু প্রথম উইকেট পতনের পরেই যেন মড়ক লাগে দলটির।
প্রয়োজনীয় মুহূর্তে সাজঘরে ফিরতে থাকেন বাকি ব্যাটসম্যানরা। নিতিশ রানা (০), সুনীল নারিন (২) দ্রুত ফিরলে তখনও ক্রিজে ছিলেন ওপেনার গিল। কিন্তু কেকেআর ওপেনার ৪৩ বলে ৫১ রানে ফিরলে আর মাথা তুলতে পারেনি তারা। তার বিদায়ের পর দিনেশ কার্তিক ৯ রানে সাজঘরে ফিরেছেন। সাকিবতো নেমেই প্রথম বলে লেগ বিফোরে ফিরেছেন রানের খাতা না খুলে! একই ওভারে দুটি উইকেট নেন জাদেজা।
সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে ইয়ন মরগানও ছন্দে ফিরতে পারলেন না। ফিরেছেন ৪ রানে। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে কলকাতা করতে পারে ১৬৫ রান।
চেন্নাইয়ের বোলারদের মধ্যে ৩৮ রানে ৩ উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। ২৯ দুটি করে নেন জশ হ্যাজেলউড ও রবীন্দ্র জাদেজা। একটি করে নিয়েছেন দীপক চাহার ও ডোয়াইন ব্রাভো।
ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য অনন্য কীর্তিতে নাম লেখান ধোনি। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে ৩০০ ম্যাচ নেতৃত্ব দেওয়ার নজির গড়েন। তার মাইলফলকের ম্যাচটায় টস হারলেও ফাফ দু প্লেসি ঝড়ে ৩ উইকেটে চেন্নাই সংগ্রহ করে ১৯২ রান।
শুক্রবার দুবাইয়ে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা। শুরুতে কিছুটা রয়েসয়ে খেললেও পরে ঝড় তুলেন চেন্নাই সুপার কিংস ব্যাটসম্যানরা। বিশেষত দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ফাফ ডু প্লেসিস।
৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৯ বলে ৮৬ রান করেন তিনি। অবশ্য ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সাজঘরে ফিরতে পারতেন তিনি। সাকিব আল হাসানের বলের লাইন মিস করেছিলেন তিনি। কিন্তু স্টাম্পিং করার জন্য বল হাতেই রাখতে পারেননি কলকাতার উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিক। শেষ অবধি ডু প্লেসিসই হয়েছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।
৩ ছক্কায় রবিন উথাপ্পার ১৫ বলে ৩১ ও ২০ বলে মঈন আলীর ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে ১৯২ রানের সংগ্রহ পায় চেন্নাই। কলকাতার পক্ষে ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন সুনীল নারিন। ৩ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন সাকিব।
ওপেনিং জুটিতে ঋতুরাজ ও ফাফ দু প্লেসি করেন ৬১ রান। ৩২ রানে ঋতু ফিরলে আগ্রাসী ছন্দটা ধরে রাখেন মঈন আলী ও রবিন উথাপ্পাও। রবিন ১৫ বলে ৩১ রানে ফিরেছেন। তবে শেষের দিকে বেশি কার্যকরী ছিলেন মঈন। ২০ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। শুরু থেকে চেন্নাইকে এগিয়ে নেওয়া ফাফ ইনিংসের শেষ বলে আউট হন ৮৬ রানে। প্রোটিয়া তারকার ৫৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছয়।
শুরুর ওভারে সাকিব বল হাতে আক্রমণে এলেও শেষ পর্যন্ত খরুচেই ছিলেন। ৩ ওভারে রান দিয়েছেন ৩৩! কার্যকরী ছিলেন নারিন। ২৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। একটি নেন শিবম মাবি।
ফাইনালে দারুণ ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরা হন ফাফ ডু প্লেসি।
চেন্নাইয়ের ওপেনার গায়কড় এই আসরে ১৬ ইনিংসে ৬৩৫ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে অরেঞ্জ ক্যাপ জিতেছেন। দুই রান কম করা একই দলের আরেক ওপেনার ডু প্লেসি দ্বিতীয় হয়েছেন। এক আসরের রেকর্ড ৩২ উইকেট পেয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হার্শাল প্যাটেল পারপেল ক্যাপ জিতেছেন। তিনি আইপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে ডোয়েন ব্রাভোর সঙ্গে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হলেন।
Discussion about this post