নিজস্ব প্রতিবেদক
মানুষ চেষ্টা করলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। পরিশ্রম আর অধ্যবসায় দিয়ে অসম্ভবকেও যে জয় করা যায় তা দেখালেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুর গ্রামের মেয়ে তামান্না আক্তার নূরা।
বাবা রওশন আলী ও মা খাদিজা পারভীন শিল্পীর তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় তামান্না আক্তার নূরা।বাবা রওশন আলী স্থানীয় ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদরাসার (নন এমপিও) বিএসসির শিক্ষক। মা একজন গৃহিণী।
জন্ম থেকেই দুই হাত ও একটি পা নেই। হুইল চেয়ারে করে প্রতিদিন স্কুলে আনা-নেয়া করেন নিজেই। এতো প্রতিবন্ধকতার মাঝেও বাবা মার কষ্টের প্রতিদান দিয়েছে তামান্না। এক পায়ে লিখেই পিইসি, জেএসসি, এসএসসিতে পেয়েছে জিপিএ-৫। সবশেষ এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ অর্জন করেন তামান্না। ধারাবাহিক এ সাফল্যে খুশি তামান্না ও তার গর্বিত পিতা-মাতা।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন দিয়ে কথা বলেন তামান্নার সঙ্গে। তাকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তার স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী তিনি ‘বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে’ আবেদন করেছেন। এবার তামান্নার চিকিৎসারও সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে তাঁকে পরীক্ষা করেছেন ৩০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী, এখন তাঁর চিকিৎসা চলবে। তাঁর শরীরে কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজ করবেন চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসেন তামান্ন।
ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তামান্না আমাদের হাসপাতালে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তামান্নার খোঁজ নিচ্ছেন, তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তাঁর জন্য কৃত্রিম পা ব্যবহার করা যায় কি না, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।’
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। এ বিষয়ে তিনি ফেসবুকে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ্, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আপা আমাদের অদম্য মেধাবী বোন তামান্না নূরার লেখাপড়ার যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসা তথা কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর গুরুদায়িত্বও নিয়েছেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৩০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তামান্নাকে ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। সবাই তামান্নার জন্য দোয়া করবেন।’
Discussion about this post