নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ২০২০ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণরা।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।বংগবন্ধুর সোনার বাংলায় সেকেন্ড টাইম কেন নয় ? মমতাময়ী শেখ হাসিনার বাংলায় সেকেন্ড টাইম কেন নয় ? উই ওয়ান্ট সেকেন্ড টাইম, শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে প্রেসক্লাব প্রাংগণ।
অবস্থান কর্মসূচির নেতৃত্বদানকারী সংগ্রাম খান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় সভায় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না রাখার কথা বলা হয়েছে। যদিও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় এই সুযোগ দিতে চান বলে নিজে জানিয়েছেন। তবে কিছু ব্যক্তির জন্য উপাচার্য মহোদয়ের এই যৌক্তিক ইচ্ছা পূরণ হচ্ছেনা।
তিনি আরও বলেন,, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল এবং গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষামন্ত্রী এবং ইউজিসির আহবানে সাড়া দিয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দিচ্ছে। তাহলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন দেবে না? আমরা চবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চাই। আমি প্রথমবার পরীক্ষা দিয়ে খারাপ করেছি। তাই বলে আমি দ্বিতীয়বার সুযোগ পাবো না এটি হতে পারে না!
শিক্ষামন্ত্রী এখন পর্যন্ত দুইবার দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখার কথা বলেছেন। এছাড়া ইউজিসিসহ চবির অনেক ডিন এবং অধ্যাপক দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখার পক্ষে হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ডিন আমাদের এই দাবির দিকে কর্ণপাত করছে না। শিক্ষামন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের মতামতের পরও কেন আমরা আমাদের অধিকার পাচ্ছিনা?
চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী মিরকাতুল বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সম্মানীয় শিক্ষকদের কাছে আমরা বারবার গিয়েছি। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে তাঁরা আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দাবি মেনে েনিয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগের কথা ঘোষণা করেছে। এতে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়েছে।মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বারবার বলার পরও কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ নাই বলে ঘোষণা করা হলো?
শিক্ষার্থীরা বলেন, আসলে করোনাকালীন সময়ে অটোপাশ এর মাধ্যমে ২০ ব্যাচ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।২০ ব্যাচ যেনো এক অবহেলিত ব্যাচ।এই অটোপাশ এর কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে এ+ নিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যন্ত সীট পাচ্ছে না।মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা যে দিবে তাও হয়ে ওঠে নি।কারণ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোও সকলকে পর্বের জিপিএ বাতিল করে জিপিএ বাড়িয়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছে। করোনার দুর্যোগময় সংকটকালে মানসিক ও শারীরিক বিপর্যস্ততার মধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রী ভালো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেনি, তাই ভালো ফলাফল হয়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সকলের জীবন যেনো এক ধোঁয়াশায় রয়ে গেছে।কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত না হতে পারায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরিবার এবং সমাজের চাপে পরে দৈনিক আত্মহত্যা, মাদক গ্রহণ সহ নানারকম ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।যা দেশ এবং সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।এসকল শিক্ষার্থীরা যেনো আবার বই এবং পড়ার টেবিলকে আপন করতে পারে তাই তারা আর একটিবার সুযোগ চাচ্ছে।
তাই আমাদের দাবি, আমাদের এই যৌক্তিক চাওয়াকে অবিলম্বে মেনে নিয়ে আগামী সভাতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগের ঘোষণা করা হোক। হতাশায় বিপথে যাওয়া থেকে হাজারো তরুণকে রক্ষা করা হোক, যারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়!
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্য ন্ত জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ না রাখার পক্ষে ডিনস কমিটি যে মত দিয়েছে তা কোর কমিটিতে আলোচনা করে ঈদের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Discussion about this post