খেলাধূলা ডেস্ক
নিজের শেষ বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সব কিছু করতে তৈরি ছিলেন মেসি। ম্যাচে পাত্তাই পেলো না ক্রোয়েশিয়া। হারলো ৩-০ গোলে।দল জিতেছে ৩-০ গোলে, অবধারিতভাবেই আর্জেন্টাইন তারকা বনে গেছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।
এর ফলে মেসি গড়ে ফেলেছেন এক ইতিহাসও। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে ১০টি ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতার কৃতিত্ব দেখালেন তিনি।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মেসির আগুনে এক পেনাল্টি থেকে গোলের খাতা খোলে আর্জেন্টিনা। এরপর ইউলিয়ান অ্যালভারেজকে দিয়ে মেসি করিয়েছেন দ্বিতীয় গোলটা। মাঝমাঠের কাছে তাকে বলটা ছেড়ে দিয়েছিলেন মেসি, এরপরের কৃতিত্বের পুরোটাই পাওনা ম্যানসিটি ফরোয়ার্ডের। মাঝমাঠ থেকে একা বলটা নিয়ে গিয়ে করেছেন গোলটা, মাঝে দুই ডিফেন্ডারের ছোঁয়া লেগেছে তাতে, তাই মেসির নামে অ্যাসিস্টটা লেখা হয়নি।
তবে তৃতীয় গোলে অবদানের স্বীকৃতিটা মেসি পাবেন ঠিকই। দারুণ এক পিরোয়েট আর শোল্ডার ড্রপে ক্রোয়াট ডিফেন্ডার ইয়োসকো গেভার্দিওলকে ঘোল খাইয়ে, প্রতিপক্ষের আরও দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে অ্যালভারেজকে বাড়িয়েছিলেন বলটা, সিটি স্ট্রাইকার গোলটা করেছেন ঠিকই। আর্জেন্টিনাও চলে গেছে বিশ্বকাপের ফাইনালে।
এক গোল করে, একটি করিয়ে মেসি বনে গেছেন ম্যাচসেরা। চলতি বিশ্বকাপে চতুর্থ বারের মতো। এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরা হওয়ার কীর্তিটা তার নিজেরই। ২০১৪ বিশ্বকাপে ৪ বার ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি। সেই রেকর্ডটাই মেসি ছুঁয়ে ফেলেছেন আবার।
রেকর্ড আরও একটা হয়েছে, যে রেকর্ড নেই আর কারো। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ডটা আগেই ছিল তার দখলে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দখলে ছিল সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ডটা, তিনি সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন ৭ ম্যাচে। সেটা মেসি ছুঁয়ে ফেলেন মেক্সিকোর বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচেই। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও তিনিই হন ম্যাচসেরা, পেছনে ফেলেন রোনালদোকে।
মেসি সেখানেই থামেননি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালেও ম্যাচসেরা হন, হয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালেও। তাতেই গড়া হয়ে গেছে অনন্য নজির। বিশ্বকাপে ম্যাচসেরা হওয়ার সংখ্যাটা যে দুই অঙ্কে নিয়ে গেছেন তিনি!
সাত ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে দুইয়ে আছেন রোনালদো। তিনে থাকা আরিয়েন রবেনের ম্যাচসেরার পুরস্কার ৬টি। কিলিয়ান এমবাপে, লুকা মদ্রিচ আর লুইস সুয়ারেজের এই কীর্তি আছে পাঁচ বার করে। নেইমার, হ্যারি কেইন, এডেন হ্যাজার্ড, মিরোস্লাভ ক্লোসা, কেইসুকে হোন্ডা, হামেস রদ্রিগেজ, ওয়েসলি স্নেইডার, থমাস মুলার, পার্ক জি-সুংদের মতো তারকারা এই পুরস্কার জিতেছেন ৪ বার করে।
এটা মেসির বিশ্বেকাপে ২৫তম ম্যাচ। আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের মধ্যে যা সর্বাধিক। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড রয়েছে জার্মানির লোথার ম্যাথাউসের। ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এই ম্যাচে মাঠে নেমে ম্যাথাউসের সঙ্গে যুগ্মভাবে সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলার নজির গড়লেন মেসি।
সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা জিতুক বা হারুক, আরও একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন মেসি। সে ক্ষেত্রে এই বিশ্বকাপেই একক ভাবে সর্বাধিক ম্যাচ খেলা ফুটবলার হবেন তিনি।
এছাড়া এটি অধিনায়ক হিসাবে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড। বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসাবে ১৯টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। মেক্সিকোর রাফা মার্কেজ়ও অধিনায়ক হিসাবে ১৮টি ম্যাচ খেলেছেন। সেমিফাইনালে খেলতে নেমে মার্কেজ়কে টপকে গেলেন মেসি। বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসাবে সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় তিনি।
Discussion about this post