বিশেষ প্রতিবেদক
বাংলাদেশ স্কাউটস এর আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় ১৯-২৭ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৌচাক, গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ৩২তম এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল এবং একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরী। মর্যাদাপূর্ণ এই আয়োজনে বন্দরনগরীর অগ্রণী বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের ৯ জন স্কাউট অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ স্কাউটস, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন জেলার জেলা স্কাউট সমাবেশ ও বাংলাদেশ স্কাউটস, চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক স্কাউট সমাবেশে বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করার ফলে এই স্কাউটরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এই জাম্বুরীতে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেন। টিম লিডার শিক্ষক শাহরিয়ার আজাদের নেতৃত্বে দলের সদস্যরা হলেন মুতাসিম বিল্লাহ তকী, মাহাথির এলাহী সিদ্দিকী, মো. আরিয়ান চৌধুরী, মারুফ হোসাইন,খোরশেদ মাহবুব আলমিম রাফি, মো. মইনুদ্দিন হাসান ইসতিয়াক, শ্রাবণ আহমেদ ইমন , আদৃত ধর ও আশরাফুল ইসলাম রোহান।
২১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ৯দিনব্যাপী শুরু হওয়া জাম্বুরীর উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্কাউটস এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাম্বুরী চীফ,বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড স্কাউট ব্যুরোর এশিয়া প্যাসিফিক সাপোর্ট সেন্টারের আঞ্চলিক পরিচালক যোশে সি পাঙ্গিলিনান ও এশিয়া রিজিওনাল স্কাউট কমিটির চেয়ারম্যান বুকিংগো করভেরা।মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন ডেপুটি জাম্বুরী চীফ (প্রোগ্রাম) মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান রিপন।
তারই ধারাবাহিকতায় ২৫ জানুয়ারী স্কাউট তীর্থভূমি গাজীপুরের জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মৌচাকে অনুষ্ঠিত হলো জাম্বুরীর সমাপনী ও মহাতাঁবু জলসার এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্কাউটস এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাম্বুরী চীফ; সভাপতি, জাম্বুরী সাংগঠনিক কমিটি,বাংলাদেশ স্কাউটস; বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রীবর্গ, সরকারের সচিব,সামরিক বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও দেশি-বিদেশি সম্মানিত অতিথিবৃন্দ।
বাংলাদেশ স্কাউটস,এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনের দেশসমূহ ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্কাউট এবং স্কাউট নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী স্কাউটরা শারিরীক,মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক,সামাজিক,আধ্যাত্মিক,জীবনবোধ ও জীবনচর্চার সৌন্দর্যময় মেধার বিকাশ ঘটাতে প্রয়াসী হন। জাম্বুরীর প্রোগ্রামটি এগারোটি অ্যালান ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির সমন্বয়ে সুশৃঙ্খল এবং নিয়মতান্রিক সৌন্দর্যবলয়ে মেধাদীপ্ত সৌকর্যে সাজানো হয়।
বাংলাদেশসহ মোট ৯টি দেশের স্কাউট ও লিডারগণ এই জাম্বুরীতে অংশগ্রহণ করছেন।পুরো জাম্বুরী এলাকাকে ৪টি ভিলেজ ও ৮টি সাব-ক্যাম্পে ভাগ করা হয়। ১৮১ একর জমির জায়গা জুড়ে মৌচাকের এই জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসজ্জায় যেন নৈসর্গের অপরূপ শোভা বর্ধন করে দেশি-বিদেশিদের প্রাণের উচ্ছলতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
অংশগ্রহণকারী সদস্যরা জানায়, টপএচিভার গ্যাদারিং,উডব্যাজার রিইউনিয়ন, ভলান্টিয়ারস নাইট,সোয়াপিং,জিডিভি,ইন্টারন্যাশনাল নাইট,গ্রান্ড ক্যাম্প ফায়ার এর মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর ছিলো তাদের কাছে !
এ প্রসংগে চট্টগ্রাম ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (রোভার স্কাউট, চট্টগ্রাম এর সাবেক সহকারী কমিশনার) প্রফেসর হাবিব রহমত উল্লাহ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে বিশেষ গুরুত্বের সাথে স্কাউটিং পরিচালিত হয়ে আসছে।স্কাউটিং বালক বালিকাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। এ মাধ্যমে তারা হয়ে ওঠে মানবিক গুনাবলিসম্পন্ন, দেশপ্রেমিক ও দৃঢ়চেতা একজন মানুষ যে সকল প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করে। তাই আমরা স্কাউটিং এ ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেই এবং সকল ধরণের পৃষ্ঠপোষকতা করি। এরই ধারাবহিকতায় আজকের এই অর্জন।
Discussion about this post