ক্যারিয়ার প্রতিবেদক
ফার্মেসি কী?
ফার্মেসি ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি’ একটি বিষয় এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা। সহজভাবে এটি হলো ওষুধবিজ্ঞান। ওষুধ বানানো, এর মান নির্ধারণ, ব্যবহার, বিতরণ, পরিবেশন—এসবই এর আলোচ্য বিষয়।
ফার্মাসিস্ট কাকে বলে?
একজন ফার্মাসিস্ট হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্মেসি, কমিউনিটি ফার্মেসি, অনলাইন ফার্মেসি, ভেটেরিনারি ফার্মেসি প্রভৃতি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন।
ফার্মেসী বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে বলা হয় ফার্মাসিস্ট। তাহলে আমরা বলতে পারি ফার্মাসিস্ট হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফার্মাসিউটিক্যাল ড্রাগ উৎপাদন, বিপনন এবং এর সঠিক, নিরাপদ, কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত ও এর অপব্যবহার রোধ করে থাকেন। একজন ফার্মাসিস্টকে বলা হয় মাস্টার অব ড্রাগ (master of drug) যেখানে একজন ডাক্তারকে বলা হয় মাস্টার অব ডিজিজ (master of disease)। মূলত এখানেই ডাক্তার এবং ফার্মাসিস্ট এর মধ্যে পার্থক্য। কারন একজন ফার্মাসিস্ট একটি ড্রাগ এর উৎপাদন পদ্ধতি জানার সাথে সাথে ঐ ড্রাগটির সঠিক প্রয়োগ, কার্যকারিতা, ডোজ (dose), পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, ড্রাগ মিথষ্ক্রিয়া (drug interaction) ইত্যাদি বিষয়ে প্রভূত জ্ঞান রাখেন। তিনি যেমন একজন রোগীকে ড্রাগ ও এর প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেন, তেমনিভাবে স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত যেকোন ব্যক্তিকে এ ব্যাপারে ধারণা দিতে সক্ষম।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই ফার্মেসি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাংলাদেশে বর্তমানে পোশাকশিল্পের পরেই ফার্মেসি শিল্পের অবদান। দেশে মোট চাহিদার ৯৭-৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে।
উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি তালিকাভূক্ত ৮৫০টি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা ও ২৬৯টি এ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সব প্রতিষ্ঠান দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রফতানি করছে সুনামের সঙ্গে। প্রতি নিয়ত আমাদের দেশের ওষুধের চাহিদা বেড়ে চলেছে।
চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন বাড়াতে কোম্পানিগুলো পণ্য উৎপাদন, বিপণন, ব্যবস্থাপনা, পণ্য উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাসহ বিভিন্ন বিভাগে প্রতি বছর প্রচূর ফার্মেসি গ্রাজুয়েটদের চাকরি দিচ্ছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্ট তৈরির লক্ষ্যে চালু করেছে ফার্মেসি বিভাগ। মেধার জোরে আপনিও হয়ে যেতে পারেন এ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষকদেরকে ভালো বেতন দিয়ে থাকে। এর বাইরে ফার্মেসি পড়ে বিসিএস দিয়ে জনপ্রশাসনের ক্যাডার হতে পারবেন। সব মিলে এ যুগের তারুণ্যের পছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফার্মেসি।
ক্যারিয়ার কোথায়
এই বিভাগ তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে ক্যারিয়ার হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। সময়ের সঙ্গে এই বিভাগ–সম্পর্কিত চাকরির ক্ষেত্রও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ওষুধের চাহিদা পূরণের জন্য যেসব কোম্পানি সক্রিয়, সেখানে আকর্ষণীয় বেতনে ওষুধের ফর্মুলেশন, উৎপাদন, মান উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ, নিশ্চিতকরণ, স্থিতিশীলতা—বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টরা কাজ করেন।
ফার্মেসিগুলোতে পণ্য ব্যবস্থাপনা, পণ্যের মানোন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ফার্মাসিস্টদের চাহিদা রয়েছে।
সরকারি বিভিন্ন কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, সশস্ত্র বাহিনী, সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে উচ্চ বেতনে ফার্মাসিস্ট নিয়োগ নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সরকারের ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ফার্মাসিস্ট, ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট, ফার্মেসি ম্যানেজার বা তথ্য বিভাগে নিয়োগ নেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া শিক্ষকতা, গবেষণা বা দেশের বাইরে কাজ করার সুযোগ তো রয়েছেই।
কারা পড়বেন?
যাঁরা রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য ফার্মেসি খুবই ভালো বিষয়। বিদেশে পড়তে যাওয়া বা চাকরির জন্যও বিষয়টি খুবই আকর্ষণীয়।
কেন পড়বেন ফার্মেসি?
বর্তমানে পেশাভিত্তিক পড়াশোনার মধ্যে বিশ্বব্যাপী ফার্মেসির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কারণ এর সম্পর্ক জীবনের সঙ্গে। জীবনকে সুন্দর, সুঠাম ও নিরোগ রাখতে প্রয়োজনীয় ও মান সম্পন্ন ওষুধ তৈরি করেন ফার্মাসিস্টরা। আর ফার্মাসিস্ট হতে ফার্মেসি পড়া ছাড়া বিকল্প নেই। সুতরাং বুঝতেই পাড়ছেন ফার্মেসি ও ফার্মাসিস্টদের চাহিদা।
এক কথায় পড়াশোনার বিষয় হিসেবে ফার্মেসি আধুনিক, উন্নত ও যোগোপযোগী ও রুচিশীল তরুণ-তরুণীর বিষয়। মেধার জোর থাকলে এ বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করার আগেই অনেকের চাকরি মিলে। বেতনও ভালো। মেধা, মননশীলতা, উদ্যম ও পরীশ্রমের গুণে উন্নতির শিখরে ফার্মেসি গ্রাজুয়েটরা যতো তাড়াতাড়ি পৌঁছতে পারেন তা অনেক বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষেই কঠিন বইকি।
উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি তালিকাভূক্ত ৮৫০টি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা ও ২৬৯টি এ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সব প্রতিষ্ঠান দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রফতানি করছে সুনামের সঙ্গে। প্রতি নিয়ত আমাদের দেশের ওষুধের চাহিদা বেড়ে চলেছে।
চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন বাড়াতে কোম্পানিগুলো পণ্য উৎপাদন, বিপণন, ব্যবস্থাপনা, পণ্য উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাসহ বিভিন্ন বিভাগে প্রতি বছর প্রচূর ফার্মেসি গ্রাজুয়েটদের চাকরি দিচ্ছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্ট তৈরির লক্ষ্যে চালু করেছে ফার্মেসি বিভাগ। মেধার জোরে আপনিও হয়ে যেতে পারেন এ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষকদেরকে ভালো বেতন দিয়ে থাকে। এর বাইরে ফার্মেসি পড়ে বিসিএস দিয়ে জনপ্রশাসনের ক্যাডার হতে পারবেন। সব মিলে এ যুগের তারুণ্যের পছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফার্মেসি।
কোথায় পড়বেন?
ফার্মেসি শিক্ষা ও পেশার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিলের তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে ১৩ টি সরকারি ও ২৮ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি চালু রয়েছে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বপ্রথম ১৯৬৪ সালে স্নাতক পর্যায়ে ফার্মেসি শিক্ষা চালু করে। এর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়. কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়ে পড়াশোনা চালু করে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আশা ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, বিজিসি ট্রাষ্ট ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটি, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথ ইষ্ট ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, ষ্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ষ্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজী এন্ড সাইন্সেস (ইউ.আই.টি.এস), ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি চিটাগং, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।
Discussion about this post