খেলাধূলা ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেন একাই লড়লেন বুড়ো (?) মাহমুদউল্লাহ। তিনি বোঝালেন কেন তাকে বিশ্বকাপ দলে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা যৌক্তিক ছিল। অথচ তার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপের আগে স্কোয়াডে রাখা না রাখা নিয়ে নানা রকম জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই রিয়াদই এবারের বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকালেন।এবারের বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি করে দলকে একটি সম্মানজনক হারে সহায়তা করেন এ ব্যাটার।
একাধিক বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড়ও রিয়াদ। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ৬টি ব্যক্তিগত শতক দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। তার মধ্যে রেকর্ড তিনটি ম্যাজিক ফিগার এসেছে রিয়াদের ব্যাটে। এছাড়া দুটি সেঞ্চুরি আছে সাকিব আল হাসানের, মুশফিকুর রহিম করেছেন একটি।
৩৮২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একের পর এক উইকেটের পতন হতে থাকে বাংলাদেশের। রিয়াদ যখন ক্রিজে আসেন তখন দলের রান ৪২; উইকেট নেই ৪টি। তার ক্রিজে আসার কিছুক্ষণ পর লিটন দাসও আউট হয়ে গেলে যেন ‘একাকি সৈনিক’ হয়ে পড়েন রিয়াদ। তবেও তিনি টলে যাননি।
এক প্রান্ত আগলে রেখে প্রোটিয়া বোলারদের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে গেছেন তিনি।প্রোটিয়া বোলারদের একের পর এক চার ছয় মেরে ১০৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন রিয়াদ।
২৭তম ওভারে জেরাল্ড কোয়েটজেকে চার মেরে দলীয় স্কোর একশ পার করেন মাহমুদউল্লাহ। দলের বিপর্যয়ের মধ্যে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে হাফ সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি ৬৭ বল খেলে। নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত ৪১ ও ৪৬ রান করার পর এই বিশ্বকাপে প্রথম ও ক্যারিয়ারের ২৮তম ফিফটি করলেন মাহমুদউল্লাহ। এরই মধ্যে ৭ উইকেট পড়ে গেছে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেট হারায় ৫৮ রানে।এরপর নাসুম আহমেদ-হাসান মাহমুদকে নিয়ে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদউল্লাহ। তবে এই ব্যাটারকে কেউই যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন মাহমুদউল্লাহ। রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়ছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছেন তিনি। তিন অঙ্কে পৌঁছাতে তিনি খরচ করেছেন ১০৫ বল। শেষ পর্যন্ত তিনি থেমেছেন ১১১ রানে। আর বাংলাদেশ থেমেছে ২৩৩ রানে।
অথচ সর্বশেষ এশিয়া কাপেও দর্শক হয়ে ছিলেন রিয়াদ। এরপর বিশ্বকাপেও জায়গা পাওয়ার সংশয় ছিল, সেটি কাটিয়ে তিনি এখন পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা পারফর্মারও। কিন্তু আগের ম্যাচগুলোতে রিয়াদকে সাত নম্বরে নামানোয় টিম ম্যানেজমেন্ট সমালোচিত হয়েছিল। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে একধাপ এগিয়ে তাকে নামানো হয় ছয় নম্বরে। অথচ তখন বাংলাদেশ পুরোদমে বিপর্যস্ত, ৬০ রানেই নেই তাদের ৫ উইকেট।
এরপর অপরপ্রান্তে তাকে টেল-এন্ডাররা আসা-যাওয়ার মাঝেই বিরতি দিয়ে সঙ্গ দিচ্ছিল। সতীর্থদের ব্যাটিং ব্যর্থতার মধ্যে দাঁড়িয়ে এবারের সেঞ্চুরি করতে মাহমুদউল্লাহর লাগল ১০৪ বল। অনবদ্য ইনিংসটিতে ১১টি চার ও ৪টি ছক্কার মারে শেষ পর্যন্ত তিনি ১১১ বলে করেছেন সমান ১১১ রান।
Discussion about this post