শিক্ষার আলো ডেস্ক
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা থেকে বিজ্ঞানমুখী প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতিবছর বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করে আসছে চট্টগ্রামের খ্যাতিমান ইংলিশ মিডিয়াম (ন্যাশনাল কারিকুলাম)বিদ্যাপীঠ স্কুল অব সায়েন্স ,বিজিনেস এন্ড হিউমেনিটিজ (SSBH)।
সম্প্রতি স্কুল ক্যাম্পাসে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের নানা প্রকল্প নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো উৎসবমূখর বিজ্ঞানমেলা ২০২৩ । প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠেছিল কেউ চিকিৎসা বিজ্ঞানী, কেউ রসায়ন বিজ্ঞানী কেউ পদার্থবিজ্ঞানী কেউবা পরিবেশ ও মহাকাশ বিজ্ঞানী।
তাদের তৈরি রামপুর পারমাণবিক বৈদ্যুতিক পাওয়ার প্ল্যান্ট, ভূমিকম্প সংকেত যন্ত্র, ইলেকট্রিসিটি জেনারেটর উইথ রেইন ওয়াটার,ভলকানো, থ্রী ডি হলোগ্রাম , ডিজিটাল সিটি, আরডুইনো রোবট কার,স্মার্ট ব্রীজ,রিয়েলিটিভিটি থিওরী,লাই ডিটেক্টর,সোলার কার,স্মার্ট জেব্রা ক্রসিং, জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশের ক্ষতি,ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেম, কৃত্রিম বৃষ্টি ইত্যাদি উপস্খিত সুধীজনদের অবাক করে।
বিশেষ করে ছোট্টমণিদের বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রকল্প যেমনঃ পরিবেশ দূষণ,ঋতু পরিবর্তন,দিন ও রাত্রির সংঘটন,ক্ষুদে রোবট,ফুসফুসের কাজ ইত্যাদি ও তাদের উপস্থাপনা সবাইকে মুগ্ধ করে ।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিশিষ্ট ভাষাপ্রশিক্ষক মেহরাব মাসুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিজ্ঞানমেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এর উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ আবুল বাসার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজ অব সায়েন্স ,বিজিনেস এন্ড হিউমেনিটিজ (CSBH)এর অধ্যক্ষ প্রফেসর সুহাস চন্দ্র, এসএসবিএইচ এর অধ্যক্ষ শেখ মো: আব্দুস সেলিম এবং প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম এবং শিক্ষার আলো পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক এস,এম, পারভেজ।এছাড়া বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকবৃন্দের উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে এই উদ্ভাবনী মেলা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মোঃ আবুল বাসার বলেন, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষার বিবেচনায় আমরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। বিভিন্ন কারণে বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষায় ছাত্ররা আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাই সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে এখন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলতে পারলে তারা একদিন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।নুতন কারিকুলামে সরকার উদ্ভাবনী ও প্রায়োগিক জ্ঞানকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আজকের এই বিজ্ঞানমেলা অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে মেহরাব মাসুক বলেন,“স্টিম ইঞ্জিন থেকে শুরু করে বিদ্যুত উৎপাদনে ঘটে বিজ্ঞান আবিষ্কারের জগতে প্রথম বিপ্লব। ক্রমান্বয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আসে তৃতীয় শিল্প বিপ্লব।রোবট ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবিষ্কারে এখন বিশ্ব চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে। তাই এই নুতন জগতের সাথে আমাদের প্রজন্মদের পরিচয় করিয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন।ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত স্কুল পর্যায়ে রোবোটিক্স কোর্স চালু করেছি। জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমান আমাদের সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন,আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছেন।তাই সেই লক্ষ্যে ভবিষ্যত প্রজন্মকে সাথে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
অধ্যক্ষ শেখ মো: আব্দুস সেলিম বলেন, বিজ্ঞান মেলার আয়োজন শিক্ষার্থীদের নতুন চিন্তার খোরাক দেবে এবং মেলায় প্রদর্শিত প্রযুক্তিগুলো পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে। সেজন্য আমরা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্কুলে নিয়মিত বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করে চলেছি।”
এই আয়োজন সফল করতে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ।
মেলা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিদের হাত থেকে বিজয়ী উদ্ভাবকরা পুরস্কার এবং সনদপত্র গ্রহণ করেন।
Discussion about this post