তানভীর পিয়াল
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স-এর পেশাজীবী ও গবেষণায় আগ্রহীদের জন্য পৃথক সুযোগ রেখে শুরু হতে যাচ্ছে নতুন মাস্টার্স প্রোগ্রাম। মাস্টার অব সায়েন্স ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (এমএসসি ইন সিএসই) নামের এ প্রোগ্রামটিতে ভর্তি হতে পারছে যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও তদ্সম্পর্কিত বিভাগ থেকে বিএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা।
চলমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশের মানবসম্পদকে আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে গড়ে তুলতে আউটকাম বেইজড এডুকেশন নির্ভর এ কারিকুলাম তৈরি করা হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক গভীর জ্ঞানের পাশাপাশি ক্রিটিকাল থিংকিং, প্রবলেম এনালাইসিস, ডেভলপমেন্ট অব সলিউশন, মডার্ন টুল ইউসেজ, এথিকস, এনভায়রনমেন্ট এন্ড সাসটেইনেবিলিটি, ইন্ডিভিজুয়াল এন্ড টিমওয়ার্ক, কমিউনিকেশন, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এন্ড ফাইন্যান্স এর মতো আউটকামকে কারিকুলামে গুরুত্বসহকারে সন্নিবেশিত করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা গবেষণা বা কর্মক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারে।
চট্টগ্রামের উচ্চশিক্ষা অঙ্গনে গবেষণানির্ভর শিক্ষার সুযোগ আগ্রহী শিক্ষার্থীর তুলনায় খুবই কম। এ অভাব পূরণে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বদ্ধপরিকর। তারই ধারাবাহিকতায় শুরু হয়েছে এমএসসি ইন সিএসই প্রোগ্রামটি। অত্যাধুনিক ল্যাব ও বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে তৈরি করা কারিকুলাম এ প্রোগ্রামটিকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে তুলেছে। এছাড়া পাবলিকেশনের সুযোগ থাকায় এ প্রোগ্রাম উচ্চতর গবেষণার প্রাক-প্রস্তুতিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করবে। বিশেষ করে রিসার্চ মাস্টার্স না থাকায় যারা বিদেশে সরাসরি পিএইচডিতে ভর্তি হতে পারেন না, তাদের জন্য বিশেষ উপকারে আসবে এই মাস্টার্স।
মোট ৪০ ক্রেডিটের এ প্রোগ্রামে থিসিস ও প্রজেক্ট এই দুই ধরনের যে কোনো একটিতে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা। গবেষণাকে প্রাধাণ্য দিয়ে ও আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির এই মর্যাদাপূর্ণ ডিগ্রিটির থিসিসনির্ভর প্রোগ্রামে ৪০ ক্রেডিটের মধ্যে ১৮ ক্রেডিট অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ ক্রেডিটই থাকছে থিসিসে। এছাড়াও যারা প্রজেক্টনির্ভর ডিগ্রি অর্জন করতে আগ্রহী, তাদের ক্ষেত্রে ৪০ ক্রেডিটের ৩৬ ক্রেডিট থাকছে কোর্সওয়ার্ক আর বাকি ৬ ক্রেডিট থাকছে প্রজেক্টে।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এ প্রোগ্রামে পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন দুই ধরনের ক্যাটাগরি তৈরি করা হয়েছে, যাতে পেশাজীবীরা তাদের চাকরির পাশাপাশি এ ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। এক্ষেত্রে খণ্ডকালীন শিক্ষার্থীরা প্রতি সেমিস্টারে ১২ ক্রেডিট আর পূর্ণকালীন শিক্ষার্থীরা ১৫ ক্রেডিট পর্যন্ত বিষয় নিতে পারবে। প্রতি সেমিস্টারের শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য মেধাভিত্তিক স্কলারশিপের ব্যবস্থা থাকছে। উপরন্তু, পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে কোর্স ওয়ার্ক ও থিসিস সম্পন্ন করার সুযোগ থাকছে।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাহীদ মো. আসিফ ইকবাল বলেন, আমাদের এমএসসি ইন সিএসই প্রোগ্রামে গবেষক ও পেশাজীবী দু’ধরনের শিক্ষার্থীদেরই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পিএইচডি বা উচ্চতর গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান এই কারিকুলামটিকে ভারসাম্য এনে দিয়েছে। বর্তমান চাকরির বাজারে উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে আবশ্যক পেশাগত শিক্ষা এই মাস্টার্স প্রোগ্রামটিতে দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর ড. তৌফিক সাঈদ বলেন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে দক্ষ পেশাদারদের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। এ বিষয়ে মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা সায়েন্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ খুলে দিতে পারে। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির এ মাস্টার্সে গবেষণা হলো একটি উল্লেখযোগ্য অংশ, যা শিক্ষার্থীদের অত্যাধুনিক প্রকল্পে কাজ করার এবং প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অবদান রাখার সুযোগ তৈরি করবে।
Discussion about this post