শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল পুণর্মূল্যায়নের দাবিতে সারাদেশের বিভিন্ন বোর্ডে বিক্ষোভ করছেন একদল শিক্ষার্থী। এতে ঘটেছে হাতাহাতি ও আহত হওয়ার ঘটনাও!
ঢাকা
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করছেন একদল শিক্ষার্থী। তারা বলছে, কর্মসূচি চলাকালে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলায় ছয় শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা ১১টা থেকে তাদের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। তাদের সঙ্গে অনেক নারী অভিভাবককে দেখা যায়। দুপুর পৌনে ২টার দিকে বোর্ডের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুর ২টার দিকে শিক্ষা বোর্ডের প্রবেশপথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিন ছাত্রীসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, নতুন নিয়মে পরীক্ষার খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। যে কারণে মার্কিংয়েও ভুল হয়েছে। এতে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তারা। এবার যত বেশি পরীক্ষা হয়েছে সে বোর্ডের শিক্ষার্থীরা তত বেশি পরীক্ষা দিয়েছে, তারা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো বোর্ডে ৬ পরীক্ষা দিয়েছে কেউ ৩টি পরীক্ষা দিয়েছে। অথচ রেজাল্টের ক্ষেত্রে কম পরীক্ষা দেওয়া বোর্ডের রেজাল্ট ভালো হয়েছে। এই বৈষম্য আমরা মানি না।
এ সময় অবিলম্বে পরীক্ষার ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
কুমিল্লা
উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করা শিক্ষার্থীদের গণহারে পাস করাতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফটকে তালা ঝুলিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বোর্ড চেয়ারম্যান ড. নিজামুল করিমকে। রবিবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে কুমিল্লা বোর্ডের অন্তর্গত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নেন। এ সময় তারা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটক আটকে দেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে। আমরা তাদের দাবির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানাবো। কিন্তু তারা তা না শুনেই ফটকের সামনে বসে আছে। তারা আজই সবাই ফল চায়। সবাই পাস চায়।’
আরও পড়ুনঃ এডি সায়েন্টিফিক র্যাঙ্কিংয়ে তৃতীয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
যশোর
‘বৈষম্যহীন রেজাল্টের’ দাবিতে যশোরে গণমিছিল ও শিক্ষাবোর্ড ঘেরাও করেছেন সদ্যঘোষিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা গণমিছিল ও শিক্ষাবোর্ড ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করেন। বোর্ডের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে বোর্ড সচিব প্রফেসর আব্দুর রহিম গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তারা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে চান। পরে গেট খুলে দিলে তারা বোর্ড চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বৈষম্যহীন ফলাফলের দাবি করেন। তারা বলেন, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার খাতা যথাযথ মূল্যায়ন না করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে খাতা পুনর্মূল্যায়ন করে পরীক্ষার ফলাফলের দাবি জানান তারা। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের অফিসের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এ বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে তাদের দাবিসহ একটি লিখিত স্মারকলিপি নেওয়া হয়েছে। এটি আন্তঃবোর্ডের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’
এইচএসসি ২০২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রায়হান চৌধুরী বলেন, আমরা বৈষম্যহীন রেজাল্ট চাই। আমাদের যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে এবং যেগুলো হয়নি, দুটো মিলেই আমরা বৈষম্যহীন ফলের দাবি করছি। অনেকের রেজাল্টে দেখা গেছে— অযৌক্তিকভাবে তাদের ফেল দেখানো হয়েছে, কারও কারও রেজাল্ট খারাপ দেখানো হয়েছে। আমরা বৈষম্যহীন রেজাল্ট চাই, যাদের অযৌক্তিকভাবে ফেল দেখানো হয়েছে তাদের পাস চাই। সবার প্রত্যাশিত রেজাল্ট চাই।
প্রসংগত গত ১৫ অক্টোবর চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সারা দেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন একদল শিক্ষার্থী ফল বাতিলের দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।
Discussion about this post