শিক্ষার আলো ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে তাদের আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
গণমাধ্বিযমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আন্দোলনের মুখপাত্ররা বলেন, “মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের আমন্ত্রণে আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তিনি আমাদের দাবির যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ‘স্বতন্ত্র পরিচয়’ নিশ্চিতের উপযুক্ত আশ্বাস দিয়েছেন।”
এতে বলা হয়, ‘শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী সাত কলেজের ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করবেন। তবে অধিভুক্তি বাতিল হলেও সাত কলেজকে ফের পেছনে ফেরানো হবে না। বরং সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন একটি স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করা হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় এ পরিচয় তৈরি করা সম্ভব, সেটা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি ও একটি বিশেষজ্ঞ টিম নির্ধারণ করবে। এজন্য তিনি আমাদের থেকে সময় চেয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি সাত কলেজের সবগুলো ক্যাম্পাস পরিদর্শন করবেন। মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটিতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করার বিষয়েও তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’
বিবৃতি বলা হয়, ‘আমরা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের আশ্বাসে সন্তুষ্ট। তাই আমরা আমাদের চলমান আন্দোলন-কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এখন থেকে সাত কলেজের দাবি নিয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ে কোনো কর্মসূচি নেই। আমরা শুরু থেকে রাস্তা অবরোধ কিংবা বিক্ষোভ-সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পদ্ধতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু একটা পর্যায়ে আমরা কোনো ধরনের আশ্বাস না পেয়ে একপ্রকার বাধ্য হয়ে আন্দোলন শুরু করেছি। এখন আমাদের মনে হয়েছে, মাননীয় উপদেষ্টার আশ্বাসের পর আর আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। আলোচনার দরজা উন্মুক্ত হয়েছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে দাবি আদায় করতে পারব।’
বিবৃতি আর বলা হয়, ‘এ সময়ের মধ্যে সাত কলেজের স্বাভাবিক ক্লাস-পরীক্ষা কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলবে। শুধু তাই নয়, সাত কলেজের জন্য নতুন কাঠামো তৈরি হওয়া ও পরিচালনা কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাত কলেজের পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশ করা এবং সনদ প্রদান করার মতো নিয়মিত কার্যক্রমগুলো সম্পাদন করবে। যাতে করে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের পরিচয় সংকট তৈরি না হয়। এ ছাড়া ২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেরার পর যে যে ধরনের সংকট তৈরি হয়েছিল, সবগুলো সামনে রেখে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে করে সে ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি না হয়। এ সময়ের মধ্যে যদি ফলাফল বিপর্যয়ের মতো ঘটনা ঘটে, তাহলে বিশেষ ব্যবস্থায় খাতা পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ও যেন এ বিষয়টি তাদের পর্যবেক্ষণে রাখে, সে দাবি আমরা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য , সাত কলেজ সংস্কার কমিশন বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন গঠনের দাবিতে আন্দোলন করছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই অধিভুক্তির শুরু থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা করে আসছে। তৎকালীন সময়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমঝোতার কথা বলা হলেও গত ছয় বছরে কোনও সমাধান দিতে পারেনি কোন কর্তৃপক্ষ ।
Discussion about this post