বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে গত দেড়মাস ধরে চলছে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা। দেশের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বাইরে প্রথম এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা হয়। এবার এ জিনোম সেন্টারে ক্যান্সারের জন্য দায়ী জিন শনাক্তকরণ এবং এর ঔষধ তৈরির কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের জুনে যবিপ্রবিতে এ জিনোম সেন্টার বা ল্যাবটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের জিনোম সেন্টার পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারের মূল উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশে বায়োইনফরমেটিক্সের জ্ঞান ছড়িয়ে দেয়া। এর জন্য এখানে বিভিন্ন সময়ে বেসিক বায়োইনফরমেটিক্সের ওপর ট্রেনিং প্রদান করা হবে। ভবিষ্যতে ক্যান্সার ও জেনেটিক ডিসঅর্ডার শনাক্তকরণ এবং পারসোনালাইজড ঔষধ তৈরিতে এই জিনোম সেন্টারটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
এছাড়াও যবিপ্রবি জিনোম সেন্টার ব্যাকটেরিয়া শনাক্তকরণ, বিভিন্ন অণুজীবের DNA সিকুয়েশ্চিং, ব্যাকটেরিয়ার জীবন রহস্য উন্মোচন ইত্যাদি কাজ করতে সক্ষম। ভবিষ্যতে আরও একটি উন্নতমানের NGS মেশিন ক্রয় করা এবং জিনোম সেন্টারকে একটি বায়োইনফরমেটিক্স ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার দেশের অন্যতম এক অত্যাধুনিক গবেষণাগার। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন কেমিক্যালের আনবিক আকার, ঘনত্ব এবং এর উপাদান নির্ণয় করতে সক্ষম। এর পাশাপাশি আমাদের জিনোম সেন্টারে মাছের জিনোমিক রিসার্চ, জিন সিকোয়েন্সিংসহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা সম্ভব। বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এই বিষয়গুলো নিয়ে ল্যাবে তাদের গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে আমারা এই জিনোম সেন্টারে ক্যান্সারের জন্য দায়ী জিন শনাক্তকরণ ও এর ঔষধ তৈরিতে নিজেরাই কাজ করব। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি ও লোকবল দুটোই আমাদের আছে। সাধারণত পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে এই ধরনের কাজ করা হয় এবং বাংলাদেশ থেকে প্রচুর নমুনা সেখানে পাঠানো হয়। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে খুব দ্রুত এই বিষয়ে কাজ শুরু করার। যেহেতু এটা আমাদের দেশের জন্য নতুন একটি বিষয় তাই আমাদের কাজ শুরু করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।
Discussion about this post