নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা দুর্যোগে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করার প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া শিক্ষাবর্ষ দুই মাস বাড়িয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে প্রথমটির পক্ষে শীর্ষপর্যায়ের বেশির ভাগ কর্মকর্তা।
এদিকে করোনার কারণে বেশি ক্ষতির মুখে পাঁচটি পাবলিক পরীক্ষা। নভেম্বরের নির্ধারিত পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার সঙ্গে চলতি বছরের এইচএসসি ছাড়াও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা এ তালিকায় রয়েছে। এর মধ্যে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে ডিসেম্বরে নেয়ার চিন্তা চলছে।
আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ১৫ দিন পর হবে এইচএসসি পরীক্ষা। এছাড়া আর আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর চিন্তা চলছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা দুর্যোগে প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী দু’মাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ছুটিতে ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে একাধিক বিকল্প আছে। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণির জন্য ততটা নয়। কেননা এর নবম শ্রেণির সঙ্গে সেতুবন্ধ আছে। এ ক্ষেত্রে সিলেবাস শেষ করে প্রয়োজনে ডিসেম্বরে পরীক্ষা নিতে হবে। পরীক্ষা বাতিলের সুযোগ কম। আর ক্ষতি পোষাতে কমপক্ষে দুই-তিন বছরের পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো প্রয়োজন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বিভাগ সূত্র জাানায়, জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে শিক্ষাবর্ষ আরওদু’মাস বাড়িয়ে সিলেবাস শেষ করে তারপর বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঠদান করতে বলা হয়েছে। তবে বেশির কর্মকর্তা প্রস্তাবটিকে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মনে করছেন। কেননা এমনিতে ‘ট্রমা’র মধ্যে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য তা বড় ধরনের আঘাত হতে পারে। তাই পরীক্ষার ব্যবস্থা করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, বর্তমান ছুটিতে দশম শ্রেণির প্রি-টেস্ট পরীক্ষা হয়নি। অক্টোবরে নির্ধারিত টেস্ট পরীক্ষাও অনিশ্চয়তায়। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দ্বাদশে উঠতে পারেনি। অথচ তারা আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী। ফলে সবকিছু তালগোল পেকে আছে। নভেম্বরে নির্ধারিত পিইসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়াও বন্ধ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, পিইসি পরীক্ষা বাতিল করতে আমরা বরাবরই বলে আসছি। সমীক্ষায়ও আমরা তেমন মতামত পেয়েছি।
আর শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, একাত্তর সালে আমাদের লেখাপড়া বন্ধ ছিল। তখন যেভাবে এগিয়ে নেয়া হয়েছে এবারও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যায়। পিইসি-জেএসসি দুটি পরীক্ষাই দু’বছরের জন্য বাতিল করা দরকার। শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে তিন বছরের পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও পেছানোর প্রয়োজন হতে পারে।
Discussion about this post