নিজস্ব প্রতিবেদক
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট নয় দেশের দুই লাখ ৩৪ হাজার ৪৭১ জন শিক্ষার্থী। এ কারণে বিভিন্ন বিষয়ের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ন চেয়ে মোট চার লাখ ৮১ হাজার ২২২টি আবেদন করেছে তারা। গত বছর ফল পুনর্মূল্যায়নে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৮ জন। এসএসসি পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে এটি রেকর্ডসংখ্যক আবেদন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ৩১ মে প্রকাশিত হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। এতে দেখা যায়, এবার গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। এ বছর মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন, যা গত বছর পেয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন। পরীক্ষার ফলে আপত্তি থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য গত ১ জুন শুরু হয় ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন কার্যক্রম। এ আবেদন শেষ হয় গতকাল রোববার (৭ জুন)।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৭১ জন পরীক্ষার্থী তার কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে ফল পরিবর্তনের প্রত্যাশায় পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করেছে। আবেদনের সংখ্যা ৪ লাখ ৮১ হাজার ২২২টি। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৬০টি, বরিশালে ২৩ হাজার ৮৫০টি, চট্টগ্রামে ৫২ হাজার ২৪৬টি, দিনাজপুরে ৪০ হাজার ৭৫টি, রাজশাহীতে ৪৪ হাজার ৬১টি, সিলেটে ২৩ হাজার ৭৯০টি, কুমিল্লা বোর্ডে ৩৯ হাজার ৩০৩টি, ময়মনসিংহে ৩১ হাজার ৩৩১টি, মাদরাসা বোর্ডে ২৮ হাজার ৪৮৪টি এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৭ হাজার ৫৩৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে আবেদনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ বোর্ডে ৫৯ হাজার ৭৯০ জন আবেদনকারী ফলে আপত্তি জানিয়ে আবেদন করেছে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, একেকজন শিক্ষার্থী একাধিক বিষয়ের উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছে। তার মধ্যে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, বাংলা বিষয়ে আবেদন বেশি রয়েছে। এসব বিষয়ে আশানুরূপ নম্বর না পাওয়ায় তারা পুনঃমূল্যায়নের জন্য আবেদন করেছে।
কর্মকর্তারা জানান, পাবলিক পরীক্ষার খাতা পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে সবকটি উত্তরে নম্বর দেয়া হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে (কম্পিউটারে ফল প্রণয়নে পাঠযোগ্য ফরম) উত্তোলনে ভুল হয়েছে কি-না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কি-না, এসব দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। বিষয়গুলো ঠিক না থাকলে তবে সেই খাতা নতুন করে মূল্যায়ন করা হবে। আগামী ৩০ জুন এ নিরীক্ষা আবেদনের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বরে বিষয়ের পরিবর্তিত নম্বর, গ্রেডসহ ফল পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, অনেকে ভাবে একটা আবেদন করে দেখি কিছু বাড়ে কি-না? অনেকে আবার সিরিয়াসলিই ফল পরিবর্তনের আত্মবিশ্বাস থেকে আবেদন করে। আবেদনকারীর মধ্যে যারা এক বা দুই নম্বর কম পাওয়ায় জিপিএ-৫ পায়নি তারাও রয়েছে, কৌতূহলী হয়েও কেউ কেউ আবেদন করে। ৩০ জুন পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।
Discussion about this post