বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,
করোনা-কালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় করণীয় সুপারিশ করার জন্য এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ। গতকাল শুক্রবার (১২ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানান।
সম্প্রতি মেস ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে চরম বিপাকে থাকা সম্পূর্ণ অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের বেফাঁস মন্তব্য শুনিয়েছিলেন জবি উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান। শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়ার সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন, “আমি মনে হয় সব থেকে গরিবের বাচ্চাদের নিয়ে এসে ভর্তি করেছি। তোমরা এত মিসকিন, নিজেদের আত্মমর্যাদা পর্যন্ত নেই। আমি কী বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম যে এখানে দরিদ্রদের ভর্তি করা হয়। এটা কি দরিদ্রদের এতিমখানা, মাদ্রাসা? তোমাদের তো আত্মমর্যাদা বলতে কিছু নেই, তোমাদের বিয়ে হবে না। বিয়ে করতে গেলে বলবে, তোমরা সব ফকির-মিসকিন।” গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় চলে। বেশকয়েকটি ছাত্র সংগঠন উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের পদত্যাগও দাবি করেন।
এদিকে, এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল শুক্রবার (১২ জুন) জবি কর্তৃৃপক্ষের এক অফিস আদেশে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চলমান বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় করণীয় সুপারিশ করার জন্য মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নূর মোহাম্মদকে দিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হলো। তিনি ভাড়া সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগান্তিতে থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে তাদের সমস্যা সমাধানে পরামর্শ দিবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের করনীয় সুপারিশ করবেন।
এ বিষয়ে ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, যারা মেসে থাকেন এমন শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে ৪টি ভাগে ভাগ করা হবে। যেমন, সমস্যার দিক থেকে মৃদু সমস্যা, মধ্যম সমস্যা, গুরুতর সমস্যা ও চরম সমস্যা। বাড়িওয়ালাদের ক্ষেত্রেও ৪ ভাগে ভাগ করে কাজ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এ বাসা ভাড়া সমস্যা সমাধানে যারা কাজ করছেন এমন প্রতিনিধি, সাংবাদিক, বিভাগীয় চেয়ারম্যন ও প্রক্টর অফিসের কাজ থেকে তথ্য নিয়েই রিপোর্টটি করা হবে। এছাড়াও তথ্য নিতে একটি গুগুল-মিট এর মাধ্যমে সবার সাথে আলোচনা করা হবে।
ছাত্র প্রতিনিধিরা কোন প্রস্তাবনা দিতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাসা ভাড়া সমস্যা সমাধানে যারা কাজ করছেন তারা অব্যশ্যই প্রস্তাবনা দিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, করোনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া ও শিক্ষাব্যয় সংক্রান্ত সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিক উদ্যোগ ও সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তির দাবি জানিয়ে গত বুধবার (১০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসমূহসহ, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের ১৯ জন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে দিয়েছিলেন।
Discussion about this post