ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভারত সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হলে বঙ্গভঙ্গ রদের রাজকীয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের তথা পূর্ব বাংলার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
পূর্ববঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল একটি মুসলমান মধ্যবিত্ত সমাজ সৃষ্টি করা। এই মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজই পরবর্তীকালে পূর্ববঙ্গের সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনে নেতৃত্ব দান করে। বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে পূর্ববঙ্গে মুসলিম সমাজে যে নবজাগরণ শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তারই ফল।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হলে মুসলিম সংখ্যাগুরু পূর্ববাংলা ও আসাম প্রদেশের জনগণের মনে এক নতুন আশা ও উদ্দীপনার সঞ্চার হয়। কিন্তু মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবল বিরোধিতার মুখে এ বিভক্তি রদ করা হলে মুসলমান সমাজ একে তাদের অগ্রযাত্রায় একটি বড় ধরনের আঘাত বলে মনে করে। প্রতীচ্য শিক্ষায় পঞ্চাশ বছর পশ্চাদ্বর্তী মুসলমানরা বুঝতে পারে যে, শিক্ষাক্ষেত্রে পশ্চাৎপদ হওয়াটাই সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
ব্রিটিশ কর্তৃক প্রবর্তিত শিক্ষা কার্যক্রম সাদরে গ্রহণের মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায় সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে, মুসলিম সম্প্রদায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পেছনে পড়ে থাকে। এ মনোভাব সম্পর্কে অন্তত চারটি কমিশন মন্তব্য করে, যার মধ্যে ছিল ১৮৮২ সালের হান্টার কমিশন, ১৯১২ সালের নাথান কমিটি, ১৯১৩ সালের হর্নেল কমিটি এবং ১৯১৭ সালের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন।
ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ বাংলা বিভক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে মুসলিম সম্প্রদায়ের অসন্তোষের বিষয় উপলব্ধি করে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তখন মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজন বিশিষ্ট নেতা ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, নওয়াব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এবং এ.কে ফজলুল হক। সাক্ষাৎকালে তাঁরা বঙ্গভঙ্গ রহিত করায় শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বঙ্গবিভক্তি বিলোপের ক্ষতিপূরণ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে তারা ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান। লর্ড হার্ডিঞ্জ এ প্রস্তাবের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং বিষয়টি তিনি ব্রিটিশ সরকারের পররাষ্ট্রম মন্ত্রীর নিকট সুপারিশ করবেন বলেও অঙ্গীকার করেন। ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক সরকারি ঘোষণায় এ বিষয়টি স্বীকৃত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সরকারি সিদ্ধান্তে হিন্দু নেতৃবৃন্দ ক্ষুব্ধ হন। কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ১৯১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভাইসরয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ঢাকায় একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বস্তত হবে বাংলাকে ‘অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্তির’শামিল।
তাঁরা আরও মত প্রকাশ করেন যে, পূর্ববাংলার মুসলিম সম্প্রদায় বেশির ভাগই কৃষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তাদের কোনো উপকার হবে না। লর্ড হার্ডিঞ্জ প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাকে পুনরায় বিভক্ত করার কোনো পদক্ষেপ সরকার কর্তৃক গৃহীত হবে না। তিনি আরও বলেন যে, এ নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হবে আবাসিক এবং তা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এক পর্যায়ে লর্ড হার্ডিঞ্জ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জীকে জানিয়ে দেন যে, তাঁদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।
লন্ডনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাভের পর ভারত সরকার ১৯২১ সালের ৪ এপ্রিল এক পত্রের মাধ্যমে বাংলা সরকারকে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত বিশদ পরিকল্পনা এবং এর আর্থিক সংশ্লেষ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। এতদুদ্দেশ্যে ২৭ মে লন্ডনের ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানকে প্রধান করে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি নিয়োগ করা হয়।
এ কমিটির সদস্য ছিলেন বাংলার গণশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক জি.ডব্লিউ কুচলার, কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট ড. রাসবিহারী ঘোষ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, নবাব সিরাজুল ইসলাম, ঢাকার জমিদার ও উকিল আনন্দচন্দ্র রায়, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ডব্লিউ.এ.টি আর্চবোল্ড, জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষ ললিতমোহন চট্টোপাধ্যায়, ঢাকা মাদ্রাসার (পরবর্তীকালে ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ, বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) সুপারিন্টেন্ডেন্ট শামসুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওয়াহেদ, আলীগড়ের মোহাম্মদ আলী, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ এইচ.আর জেমস, প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক সি.ডব্লিউ পিক এবং কলকাতা সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ সতীশচন্দ্র আচার্য।
নাথান কমিটি নামে পরিচিত এ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেন। প্রস্তাবে বলা হয় যে, এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে শিক্ষাদান ও আবাসিক কার্যক্রম সম্বলিত প্রতিষ্ঠান এবং কেবল শহরের কলেজগুলো এর আওতাধীন থাকবে। কমিটি অতি দ্রুত ২৫টি বিশেষ উপকমিটির পরামর্শ গ্রহণ করে এবং ওই বছর শরৎকালের মধ্যেই তাদের প্রতিবেদন পেশ করে। প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত অবকাঠামোর ইমারতের নকশাসহ ৫৩ লাখ টাকা (পরবর্তীকালে গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক ৬৭ লাখ ঢাকায় উন্নীত) মূল ব্যয় এবং ১২ লাখ টাকা বাৎসরিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্তকাজ ও পাঠদানবিষয়ক তথ্যাদি বিশদ আকারে বর্ণিত হয়। কমিটির মতে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার, লিডস, লিভারপুল প্রভৃতি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় এ প্রতিষ্ঠানটি হবে একক আবাসিক শিক্ষাক্ষেত্র। ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ কলেজ, মোহামেডান কলেজ, উইমেন্স কলেজসহ সাতটি কলেজ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকবে। কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শিক্ষাসহ আইন, চিকিৎসা, প্রকৌশল ও অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের আওতাভুক্ত থাকবে।
পরবর্তীকালে এলাহাবাদ, বেনারস, হায়দ্রাবাদ, আলীগড়, লক্ষ্ণৌ এবং আন্নামালাইতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করা হয়। বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার আওতায় পূর্ববাংলা ও আসাম সরকারের প্রশাসনিক দপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য রমনা এলাকায় ইতিপূর্বে অধিগ্রহণ করা ২৪৩ একর ভূমি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত হয়। কার্জন হল, ঢাকা কলেজ, নতুন সরকারি ভবন, সচিবালয়, সরকারি ছাপাখানা, সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসস্থল ও ছোটখাট ইমারত ওই এলাকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
পরবর্তীকালে এ সকল ইমারত, ভূমি ও স্থাপনা বার্ষিক এক হাজার টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ইজারা দেওয়া হয়। নাথান কমিটির উল্লেখযোগ্য সুপারিশ হলো- বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ও সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক পরিচালিত; এটি হবে আবাসিক ও শিক্ষাদানকারী বিশ্ববিদ্যালয়; ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা এর শিক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হবে। ১৯১৩ সালে কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প চূড়ান্ত করার পূর্বে জনমত যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ওই বছরেই ডিসেম্বর মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রী কর্তৃক প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।
কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে সরকারের ওপর প্রচন্ড অর্থনৈতিক চাপের কারণে ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ের ছোট প্রকল্প বাস্তবায়নও কঠিন হয়ে পড়ে। এ অবস্থা মুসলিম নেতৃত্বের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে এবং বিষয়টি নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী কর্তৃক ১৯১৭ সালের ৭ মার্চ ভারতীয় বিধানসভায় উত্থাপিত হয়। সরকারি মুখপাত্র শঙ্কর নারায়ণ জানান যে, সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর, তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের নিকট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প ও পরিচালনা বিষয়ে অভিমত চাওয়া হয়েছে এবং অভিমত পাওয়া গেলেই খসড়া বিল অনুমোদিত হবে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লর্ড চেমস্ফোর্ড ১৯১৭ সালের ৬ জানুয়ারি এক অভিষেক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সমস্যা ও চাহিদা নির্ণয়ের লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। লিড্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম.ই স্যাডলারের নেতৃত্বে ১৯১৯ সালে গঠিত কমিশনের প্রতিবেদনে ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা স্বীকার করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট ২৭ হাজার ২৯০ জন ছাত্রের মধ্যে ঢাকা বিভাগ ও ত্রিপুরা জেলা থেকে ৭০৯৭ জন ছাত্র অধ্যয়নরত। সুতরাং ঢাকা ছাত্রসংখ্যার দিক থেকে মধ্যস্থান দখল করে আছে। কমিশন নাথান কমিটির বেশির ভাগ সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করে এবং অতিসত্বর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য মত দেয়।
স্যাডলার কমিশনের উল্লেখযোগ্য সুপারিশ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তিকরণ ক্ষমতা থাকবে না। এটির কাজ হবে শিক্ষা দান ও গবেষণা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্বায়ত্তশাসিত একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ইম্পেরিয়াল রেজিসলেটিভ কাউন্সিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিলটি উত্থাপিত হয়। সরকার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কাউন্সিলে উত্থাপিত বিলটি বিবেচনার জন্য পাঠায়।
নভেম্বর মাসের ১ তারিখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট বিলটি পরীক্ষা করার জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটির এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য হিসেবে খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ বিলটির পক্ষে জোরালো অভিমত পেশ করেন। সিনেটের অনেক সদস্যের বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৭ থেকে ২০ ডিসেম্বর (১৯১৯) আইনের কিছু কিছু অনুচ্ছেদ, ধারা ও উপধারা সংশোধন পরিমার্জন পূর্বক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিলটির খসড়া সিনেটের সম্মতি লাভ করে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ১৩টি সুপারিশ করেছিল এবং কিছু রদবদলসহ তা ১৯২০ সালের ভারতীয় আইন সভায় গৃহীত হয়। ভারতের তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ তাতে সম্মতি প্রদান করেন। স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য ছিলেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্টার পি. জে. হার্টগ। তিনি ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।
শুরুতে ৩টি অনুষদ (কলা, বিজ্ঞান ও আইন), ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং ৩টি আবাসিক হল নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। কলা অনুষদের অধীনে ছিল ৮টি বিভাগ: সংস্কৃত ও বাংলা, ইংরেজি, শিক্ষা, ইতিহাস, আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ, ফার্সি ও উর্দু, দর্শন এবং রাজনৈতিক অর্থনীতি; বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ছিল পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিত; আইন অনুষদের অধীনে ছিল শুধুমাত্র আইন বিভাগ।
৩টি অনুষদের ৮৪৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৮৬ জন ঢাকা (শহীদুল্লাহ) হলে, ৩১৩ জন জগন্নাথ হলে এবং ১৭৮ জন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া
Discussion about this post