বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
দেশের উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গৌরব ও ঐতিহ্যে বিশ্বময় উদ্ভাসিত। দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে সোচ্চার থাকা এ বিদ্যাপীঠের জন্মদিন আজ। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশ্ব বিদ্যালয়। কালের পরিক্রমায় ৬৮ বছরে পা দিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।
রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ৬৪ সদস্যবিশিষ্ট এক কমিটি গঠন করা হয় এ দিনটিতে। এরপর ১৯৫২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শহরের ভুবন মোহন পার্কে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গণে সমবেত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ পাস করার দাবি তোলেন।
একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা। একের পর এক আন্দোলনের চাপে টনক নড়ে দেশের সুধী মহল ও সরকারের। অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাস হয়। ৬ জুলাই প্রফেসর ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে উপাচার্য করে বিশ্ববিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
মাত্র ১৬১ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এর শিক্ষার্থীসংখ্যা ৩৮ হাজারের বেশি। ৯টি অনুষদের ৫৮টি বিভাগে পাঠদান করা হচ্ছে এখন। এছাড়া ছয়টি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউট, ১৩টি একাডেমিক ভবন, ১৭টি আবাসিক হল, যার মধ্যে ১১টি ছাত্র ও ছয়টি ছাত্রীহল এবং গবেষক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ডরমিটরি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমানে শিক্ষকসংখ্যা এক হাজার ২৬০ জন এবং কর্মকর্তা রয়েছেন ৭৩৪ জন।
অন্যদিকে বিভিন্ন সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মুখ নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। দেশের প্রথম বুদ্ধিজীবী হিসেবে শহীদ হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা। এরপর স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। এমন গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে স্মরণীয় করে রেখেছে।
Discussion about this post