নিউজ ডেস্ক
করোনার ছুটি শেষ হলে তিন কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে ইউনিক আইডি বা একক পরিচয় দেওয়া শুরু করবে সরকার। প্রাক-প্রাথমিকের পাঁচ বছর বয়সী শিক্ষার্থী থেকে ১৭ বছরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা পাবে এই ইউনিক আইডি। ১৮ বছর বয়সে ১০ ডিজিটের ইউনিক আইডির নম্বরেই শিক্ষার্থীরা পাবে জাতীয় পরিচয়পত্র।
শিক্ষার্থীদেরকে মুজিববর্ষেই ইউনিক আইডি দেওয়া শুরু করার আাশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোফাইল প্রণয়ন’ ও শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)-এর ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশনাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস)’ নামে দুই প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রমটি পরিচালিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১০ সালে একটি সমন্বিত ও কার্যকর ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস’ (সিআরভিএস) ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রত্যেক নাগরিককে ইউনিক আইডি দেওয়ার নির্দেশনার আট বছর পর গত বছর শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে ইউনিক আইডি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই আইডিতে বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রের চেয়ে বেশি তথ্য থাকবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ বলেন, ‘ছুটির পর এর পুরো কাজ শুরু হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে মুজিবর্ষেই ইউনিক আইডি দিতে পারবো। আগামী জুনের মধ্যে আইডি দেওয়া শেষ করতে পারবো।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন জেনারেলের কার্যালয় এবং নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনিআইডি) অনুবিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দফতর এই কার্যক্রমে সহায়তা করছে।
ব্যানবেইস-এর আইইআইএমএস প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আইডি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। তবে করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ নিয়ে কাজ করতে পারছি না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে এই আইডির কার্যক্রম শুরু করবো।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ৮৭ লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তাদের বয়স পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যসহ বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সব মিলিয়ে নেওয়া হবে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২১ সালে। এদিকে ব্যানবেইস সূত্র জানিয়েছে, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীকে ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা এই আইডি পাবে।
অধ্যাপক শামসুল আলম বলেছিলেন, আন্তর্জাতিকভাবে জন্ম, মৃত্যু, মৃত্যুর কারণ, বিবাহ, তালাক ও দত্তক- এই ছয়টি বিষয়ই সিআরভিএস’র অংশ। কিন্তু বাংলাদেশে সিআরভিএসে ছয়টির পাশাপাশি মাইগ্রেশন, এনরোলমেন্ট ও সার্ভিস ডেলিভারি- এই তিনটি বিষয় যুক্ত হচ্ছে। এটাকে সিআরভিএস প্লাস প্লাস বলে অভিহিত করেন তিনি।
জানা গেছে, এই ডাটাবেইসে শিক্ষার্থীর ফল এবং তার ব্যক্তি জীবনের অনেক তথ্য থাকবে। চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেডাটাবেস কাজে লাগবে। শনাক্ত নম্বরটি দিলেই সংশ্লিষ্ট দফতর তার তথ্য জানতে পারবে।
Discussion about this post