নিজস্ব প্রতিবেদক
৩১তম আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড (আইবিও) চ্যালেঞ্জ-২০২০ শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে দেশে থেকেই অনলাইন প্ল্যাটফরমে জাপানের নাগাসাকিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন ‘টিম বাংলাদেশ’-এর চার শিক্ষার্থী। তারা হলেন- এসএফএক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তাসনিম বিনতে জুলফিকার, দি আগা খান স্কুলের রাফসান রহমান রায়ান, সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থী আবরার জামিল ও রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের রাদ শারার। প্রথম তিনজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিইসি ভবনের একটি ল্যাবে এবং কোয়ারেন্টাইনে থাকায় রাজশাহী থেকে শেষের জন অংশ নেবেন। এবারের আসরে বিশ্বের ৯৫টি দেশের ৩৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। গত বছর অনুষ্ঠিত ৩০তম আইবিওতে বাংলাদেশ তিনটি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছিল।
বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, বাংলাদেশ জীবজ্ঞিান অলিম্পিয়াডের (বিডিবিও) সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, কথাপ্রকাশের কর্ণধার জসিম উদ্দিন বুয়েটের ভেন্যু পরিদর্শক হিসেবে থাকবেন।
বিডিবিও ও সমকালের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান উৎসব। সেখান থেকে চারজন বিজয়ী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। উৎসব আয়োজনের বিশেষ সহযোগী হিসেবে রয়েছে কথাপ্রকাশ, কারিগরি সহযোগী ল্যাববাংলা ও প্রশিক্ষণ সহযোগী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি।
আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা, দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যবহারিক এবং আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা, দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট চারটি পর্বে সরাসরি অনুষ্ঠিত হবে এ পরীক্ষা। নির্দিষ্ট ডেডিকেটেড কম্পিউটার ব্যবহার করবেন প্রতিযোগীরা। পরীক্ষা শুরুর আগে ও পরে এবং পরীক্ষা চলাকালীন ৩৬০ ডিগ্রি ইন্সপেকশন ভিডিও ধারণ ও সরাসরি সংযুক্ত থাকতে হবে। উভয় ভেন্যুর প্রতিযোগীকেই ওয়েবক্যামের মাধ্যমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মনিটর করবে আইবিও কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে আইবিওর পাঠানো ভিডিও অনুসারে জুরি, সুপারভাইজার ও প্রতিযোগীকে শপথবাক্য পাঠ করতে হবে, যা আইবিও নির্ধারিত মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
বুয়েট ভেন্যুতে বাংলাদেশ টিমের জুরি হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. রাখহরি সরকার, বিডিবিওর সাধারণ সম্পদক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী এবং রাজশাহী ভেন্যুতে ড. মো. হাবিবুর রহমান। রেজিস্টার্ড সুপারভাইজার হিসেবে ড. তারিক আরাফাত, সাইফ বিন সালাম, তালুকদার গালিব শাহরিয়ার, মইনুল ইসলাম খান, সামিহা সাঈদ, জিয়া হাসান, হাসান জাকির এবং রাজশাহী ভেন্যুতে মো. শাহাদাত হোসেন ও মাহদি হাসান দায়িত্ব পালন করবেন।
সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জীববিজ্ঞানবিষয়ক মেধা যাচাইয়ের এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল এ বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি। সারাদেশকে ১২টি অঞ্চলে ভাগ করে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতায় প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। কিন্তু ৭টি অঞ্চলের মধ্যে আয়োজন হওয়ার পর করোনা মহামারিতে বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে আয়োজন স্থগিত রাখতে হয়। একই সঙ্গে জাপানের নাগাসাকিতে অনুষ্ঠিতব্য আইবিও ২০২০ বন্ধ ঘোষণা করা হলে উৎসব নিয়ে একটি অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে অনলাইনে প্রতিযোগিতা করার সিদ্ধান্ত হলে আবারও পুরোদমে শুরু হয় উৎসব কার্যক্রম। অঞ্চলভিত্তিক প্রতিযোগিতা শেষে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় এক হাজার ৪৪১ জন অংশ নেন। এর মধ্য থেকেই জাতীয় পর্যায়ে ৪৪ জন বিজয়ী আরও একটি পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্য থেকে ১৪ জন নির্বাচিত হন শেষ বায়োক্যাম্পের জন্য। এখান থেকে চূড়ান্তভাবে চারজন নির্বাচিত হন আইবিও চ্যালেঞ্জ অংশগ্রহণের জন্য।
Discussion about this post