নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদ ও জিঞ্জিরাম নদীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার বন্যায় উপজেলার ৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তলিয়ে যায়। এতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলাটি ভারত সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রৌমারীর উত্তরে সাহেবের আলগা হয়ে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়।
প্রায় মাস যাবত টানা বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদ, হলহলি , সোনাভরি, জিঞ্জিরাম নদী ফুলে-ফুসে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে প্লাবিত হয় কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলা।
ফলে রৌমারী উপজেলা প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এতে রৌমারীর ৯৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ভয়াবহ বন্যার স্রোতে উপজেলার বন্দবের ইউনিয়নের বলদমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফলুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পুরো বন্যা জুড়ে ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেনি। সে সব জায়গায় শতশত বানভাসি অসহায় মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
যেসব প্রতিষ্ঠান গুলি পানিতে ডুবে গেছে সে সব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। বন্যার পানির তোড়ে অনেক স্কুল মাঠের মাটি সড়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ দিন পানিতে ডুবে থাকার ফলে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র, বিল্ডিং এর ছাদ, দেয়াল, বিদ্যালয়ের মাঠ, গাছপালাসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়।
রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম রিজু বলেন, ‘বন্যার পানির কারণে স্কুলে গিয়ে দেখাশুনা করতে পারছি না। স্কুলের দেওয়াল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
বাইটকামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, স্কুলের চারদিকে পানিবন্দি থাকায় দেয়াল ধসে যাচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবং দফায় দফায় বন্যা আসার ফলে বিভিন্ন স্কুলের আসবাবপত্র ও গাছপালাসহ অনেক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান জানান, বন্যার ব্যাপকতার কারনে রৌমারীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গ্রামীণ সড়ক ও বানভাসি মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর শুকনা মৌসুমে উপজেলা প্রশাসনের মনিটরিং এর মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে জেলা প্রশাসক স্যারকে অবগত করা হবে।
Discussion about this post