আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থার ওপর সবচেয়ে বাজে প্রভাব পড়েছে। লেখাপড়ার বাইরে চলে গেছেন অনেক তরুণ। তাঁদের স্বপ্নপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মহামারি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়ের কথা বলেছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।
গত ১২ আগস্ট নিজের ব্লগ গেটস নোটে বিল গেটস ‘সাফল্যের পথ, কোভিড যুগে যেভাবে শিক্ষার্থীদের কলেজে ফিরতে সাহায্য করা যাবে’ শীর্ষক একটি ব্লগ পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়েছেন।
বিল গেটস ব্লগে লিখেছেন, শিক্ষা জগতের প্রত্যেকের মনে এই মুহূর্তে এক সেট প্রশ্ন রয়েছে। তা হচ্ছে শরতে স্কুলগুলো কী করবে? শিক্ষার্থীদের কি ক্লাসে ফেরাবে? তারা কি শিক্ষক, কর্মী ও শিক্ষার্থীদের কোভিড–১৯ থেকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবে? এসব প্রশ্নগুলো বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিষয় রয়েছে, যা আমরা এড়াতে পারব না। তা হচ্ছে ২০২০ সাল বা তার পরের হাইস্কুল ক্লাসগুলোর ভবিষ্যৎ কী হবে? আমাদের এবারের শরতে কী ঘটতে যাচ্ছে সেদিকে যেমন খেয়াল করতে হবে, তেমনি পরের বসন্ত বা পরবর্তী সময়ের বিষয়গুলো ভাবতে হবে। তা না হলে এখন কোভিড যে ভীতি সৃষ্টি করেছে, তা চলতে থাকবে এবং হাজার হাজার তরুণের স্বপ্ন স্থায়ী পথে লক্ষ্যচ্যুত করে ফেলবে।
বিল গেটস তাঁর ব্লগ পোস্টে আরও লিখেছেন, আমি আগেও লিখেছি যে ২০২৫ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের সব চাকরির মধ্যে দুই–তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে ১২তম গ্রেডের বেশি পড়াশোনা করা লাগবে। এর মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের পেশাদার প্রশিক্ষণের সনদ, দুই বছর কলেজের ডিগ্রি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর ডিগ্রি। তবে সরলভাবে বলছে, কলেজের গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাগবে। আমাদের দাতব্য সংস্থা অনেক শিক্ষার্থীকে কলেজের পড়াশোনা সম্পন্ন করতে সাহায্য করছে। এ কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি যথাসময়ে কলেজের ডিগ্রি না পেলে পড়াশোনা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থী ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ কৃষাজ্ঞ ও লাতিন শিক্ষার্থী হাইস্কুল শেষ করার দুই বছরের মধ্যে কলেজে ভর্তি হয় না। কোভিড-১৯–এর প্রভাবে এ সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। কলেজে ভর্তি না হওয়ার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। কেউ কেউ একাডেমিক পড়াশোনার জন্য প্রস্তুত থাকে না। এখন শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীদের তুলনায় অন্যদের অনলাইন শিক্ষার সুযোগ কম থাকায় এ পার্থক্য আরও বেড়ে যাবে। এর বাইরে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কাউন্সেলিং পায় না অনেক শিক্ষার্থী। এখন স্কুল বন্ধ থাকায় কাউন্সেলিং সেবাও বন্ধ রয়েছে। এর বাইরে স্বল্প আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজে পড়াশোনা আরও কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
গেটস জানান, তাঁদের দাতব্য সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সংস্থার সঙ্গে অংশীদার হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য কাজ করবে। এতে শিক্ষার্থীদের কলেজ ডিগ্রি পাওয়া সহজ হবে। এ তিনটি সংস্থা হচ্ছে কলেজ অ্যাডভাইজিং করপোরেশন, সিটি ইয়ার ও সাগা ফাউন্ডেশন।
গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তিনটি সংস্থাকে ২ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার তহবিল সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কলেজ অ্যাডভাইজিং গ্রুপ বাড়তি তিন লাখ শিক্ষার্থীকে সাহায্য করার কথা ভাবছে। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আরও বেশি তরুণদের পড়ালেখার সাহায্যের কথা বলা হচ্ছে।
এ সাহায্যের মাধ্যমে সব তরুণ শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় পরামর্শ, টিউটর ও কোচিং পাবেন, যা তাঁদের কলেজে ভর্তিতে সহায়তা করবে।
Discussion about this post