নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা মহামারি প্রাদুর্ভাবের কারণে পাঁচ মাস ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যেও খোলে, তাহলে বিভিন্ন বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে (সিলেবাস) এ বছরের পড়াশোনা শেষ করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এ জন্য প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিন ধরনের বিকল্প পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে নবম-দশম শ্রেণি এবং উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যসূচিতে কাটছাঁট করা হচ্ছে না।
কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নবম শ্রেণীতে না পড়া বিষয়গুলো পরে দশম শ্রেণীতে পড়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া এটি মাধ্যমিক স্তরের শেষ ধাপ। এখানে কাটছাঁট হলে পরবর্তী স্তরে গিয়ে সমস্যায় পড়বে শিক্ষার্থীরা। একই যুক্তিতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যসূচিও বদলানো হচ্ছে না।
করোনার কারণে ঘরবন্দি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচি কাটছাঁট করে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং প্রাথমিকের পাঠ্যসূচি করছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রথমত নবম ও দশম শ্রেণির বই একই। ফলে নবম শ্রেণিতে সব পাঠ্যসূচি শেষ না হলেও দশম শ্রেণিতে গিয়ে তা শেষ করার সুযোগ আছে। আর এই স্তরটি শেষ করে একেবারে নতুন আরেকটি স্তরে (উচ্চমাধ্যমিক) যায় শিক্ষার্থীরা। তাই এখানে হঠাৎ করেই পাঠ্যসূচি কমিয়ে দিলে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে। একই কারণ উচ্চমাধ্যমিকেও। তাই তাঁরা কেবল অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করছেন।
এদিকে প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি জন্য পাঠ্যসূচি কয়েকধাপে সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে। করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বরে খুললে তুলনামূলক একটু বড় পাঠ্যসূচি হবে। এ ক্ষেত্রে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্লাসের জন্য ৭০ থেকে ৭৩ কার্যদিবস পাওয়া যাবে। আর অক্টোবরে খুললে আরেকটু সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি হবে। এই সময়ে ৫০ কার্যদিবসে ক্লাস করা যাবে। নভেম্বরে খুললে একেবারেই সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি হবে। তখন ক্লাসের জন্য ৩০ কার্যদিবস পাওয়া যাবে।
এনসিটিবি ও নেপ জানিয়েছে, শিগগির সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়। আর পরীক্ষার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব আলোচনায় থাকলেও তা কবে এবং কীভাবে হবে, নাকি পরীক্ষা হবে না, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধের এই ঘোষণা আছে। এর মধ্যে দেশের সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে এবং পরীক্ষাগুলোর কী হবে, তা জানার প্রবল আগ্রহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
Discussion about this post