নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ঝুঁকিতে রয়েছেন। করোনা যুদ্ধে সামনের সারির যোদ্ধাদের ঝুঁকি কমাতে রোবট বানিয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন সেতারা বেগমের নামানুসারে নারীর অবয়বে তৈরী রোবটটির নাম রাখা হয়েছে ‘ক্যাপ্টেন সেতারা বেগম’। এটি করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়সহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে সক্ষম। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শও পৌঁছে দিতে পারবে রোগীর কাছে। হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা এবং ওষুধ নিয়ে স্ব-শরীরে যাওয়া এড়াতে রোবটটি উদ্ভাবিত হয়েছে। যন্ত্রটি রোগীর কাছে ঘুরে ঘুরে ওষুধ পৌঁছে দেবে।
রুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বাংলাদেশ’-এর সাত সদস্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিন মাসের চেষ্টায় এটি বানিয়েছেন। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ট্রায়াল শেষে বাণিজ্যিকভাবে এ রোবট তৈরি করা হবে।
‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বাংলাদেশ’ সংগঠনের সদস্যরা জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে যন্ত্রটি বড় ভূমিকা রাখবে। রোবটটি চিকিৎসক ও নার্সদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। চিকিৎসক তার কক্ষে বা অন্য কোথাও বসে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রোবট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
উদ্ভাবক দলের প্রধান ফারজাদুল ইসলাম বলেন, ভাইরাস সংক্রমিত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে না গিয়েও তাকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন ওষুধ, খাদ্য সরবারাহ করা যাবে। ফলে চিকিৎসকের বিকল্প হিসেবে রোবটটি কাজ করতে সক্ষম। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যেকোনো স্থান থেকে একে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। রোবটটি ৫-১০ কেজি ওজন বহন করতে সক্ষম এবং এটি টানা এক থেকে দেড় ঘণ্টা কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম।
তিনি আরও বলেন, এর সেন্সরের সামনে রোগীর মাথা রাখলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী মনিটরে দেখা যাবে। এছাড়া এতে বিশেষ ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও স্পিকার সংযুক্ত করা আছে। যার মাধ্যমে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদান করা যাবে।
রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ড. বশির আহমেদ বলেন, রোবটটির কর্মদক্ষতা আরও বাড়ানো যেতে পারে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স পুরোদমে ব্যবহার করলে তা সম্ভব হবে। আর্থিক সহযোগিতা পেলে একে আরও উন্নত করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাজারজাত করা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষায় সফল হলে রোবটটি তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেবে। এতে সামান্য কিছু মোডিফিকেশনের দরকার আছে। তারা সেগুলো করলে রোবটটি বাস্তব ক্ষেত্রে সফল ভূমিকা রাখতে পারবে।
Discussion about this post