নিজস্ব প্রতিবেদক
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও একাদশে ভর্তির জন্য কলেজ পায়নি চট্টগ্রামের ৪৪২ জন শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ভর্তির আবেদন করার সময় সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দের তালিকায় দেওয়ার সুযোগ থাকলেও এইসব শিক্ষার্থী ৫-৬টি দিয়েই আবেদন শেষ করেছে।
তাই ২৫ আগস্ট রাতে দেওয়া একাদশে ভর্তির প্রথম দফায় মনোনীতদের তালিকায় ঠাঁই মেলেনি তাদের।
তবে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক।
তিনি জানান, ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২য় দফায় পুনরায় আবেদন করার সুযোগ রয়েছে প্রথম দফায় কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের। ২য় দফায় আবেদনের সময় তাদের আবেদন ফি দিতে হবে না। কলেজের পছন্দক্রম পরিবর্তন, নতুন কলেজ যুক্তকরণ বা কোন কলেজ বাদ দেয়ার মাধ্যমে আগের (প্রথম দফায় করা) আবেদনটি আপডেট বা সংশোধন করলেই চলবে।
প্রফেসর জাহেদুল হক বলেন, সর্বোচ্চ দশটি কলেজে আবেদনের সুযোগ থাকলেও জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে ৫-৬ টির বেশি কলেজ দেয়নি। তাদের ধারণা ছিল, জিপিএ-৫ পাওয়ায় ৫-৬টি কলেজে আবেদন করলেই হবে। আর বেশি করার দরকার নেই।
‘কিন্তু যেসব কলেজে তারা আবেদন করেছে, সেসব কলেজে তাদের তুলনায় বেশি নম্বর প্রাপ্ত আবেদনকারীর সংখ্যা হয়তো বেশি ছিল। যার কারণে আবেদন করা ওই ৫-৬টি কলেজে তাদের সুযোগ হয়নি। কিন্তু সর্বোচ্চ সংখ্যক (১০ টি) কলেজে আবেদন করলে এ সমস্যা হতো না। ’
তিনি আরও বলেন, সবমিলিয়ে কলেজগুলোর মোট আসন সংখ্যার তুলনায় আবেদনকারীর সংখ্যা কম। যার কারণে সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রামে আসন সংকট হবে না। কাঙ্খিত কলেজ পাওয়া না গেলেও সব শিক্ষার্থীই কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে। যারা প্রথম তালিকায় মনোনয়ন পায়নি, তাদের পরবর্তী তালিকায় মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির তথ্য অনুযায়ী, ২৫ আগস্ট রাতে প্রকাশিত প্রথম পর্যায়ের ফলাফলে চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য মোট ১ লাখ ৯ হাজার ৭৯৯ জন শিক্ষার্থী চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছে। আর ৫ হাজার ৩৪ জন শির্ক্ষাথী ভর্তির জন্য প্রথম তালিকায় কোন কলেজ পায়নি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ ধারী ৪৪২ জন শিক্ষার্থীও রয়েছে।
হিসেবে চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদনকারী শির্ক্ষাথীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৩৩ জন। যদিও মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ৯২৩ জন শিক্ষার্থী চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করে বলে এর আগে জানিয়েছিল আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি।
শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, মোট আবেদনকারী প্রকৃতপক্ষে ১ লাখ ২৩ হাজার ৯২৩ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৩৩ জন আবেদনকারী চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি পাস করা। বাকি ৯ হাজার ৯০ জন আবেদনকারী কারিগরি, মাদ্রাসাসহ অন্যান্য বোর্ড থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ।
প্রথম তালিকায় ঠাঁই না পাওয়া এসব শিক্ষার্থীকে আগামী ৩১ অগাস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত সময়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন করতে হবে। পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়।
৫-৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে। ৭-৮ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল এবং তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ সেপ্টেম্বর।
১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর রাত কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে। আর ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি হতে হবে।
এদিকে, প্রথম মেধা তালিকায় মনোনীত হয়েও ভর্তি নিশ্চায়ন না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক।
তিনি জানান, প্রথম তালিকায় মনোনীতদের ২০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে ৩০ আগস্টের মধ্যে অবশ্যই ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন করতে হবে। নয়তো তার মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। তখন ওই শিক্ষার্থীদেরও পুনরায় আবেদন করতে হবে। তাদের আবেদন ফিও আবার দিতে হবে।
Discussion about this post