নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি শুরুর পর আরও এক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। এতে টানা ছয়মাস বন্ধ থাকছে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে আরও অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষাও।
ইতোমধ্যে জেএসসি-জেডিসি, পিইসি এবং ইইসি পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেছে। এর বিকল্প হিসেবে বার্ষিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে। তবে নভেম্বরের দিকে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে সরকার। এমনকি বাতিলের প্রস্তাবও আছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি কখন শেষ হবে, কেউই বলতে পারছি না। কিন্তু শিক্ষা অন্যান্য বিষয়ের মতোই জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রেখে শিক্ষাকেও এগিয়ে নিতে হবে। সেজন্য করণীয় নির্ধারণে কাজ চলছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রস্তাব দেবেন, এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) একটি উচ্চপর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। সেখানে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েও একটি ইনোভেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসময় নভেম্বরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিতে না পারলে কী হবে, তা আলোচনা হয়।
এতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান প্রমুখ যুক্ত ছিলেন।
পরীক্ষা না নেওয়া গেলে বিকল্প হিসেবে স্বল্পপরিসরে পরীক্ষাটি নেওয়ার প্রস্তাব আসে। এছাড়া শিক্ষার্থীর জেএসসি-এসএসসি এবং কলেজের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের মূল্যায়নের ওপর ফলাফল (গ্রেড) ঘোষণার বিষয়টিও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রয়োজনে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য অপেক্ষার প্রস্তাবও বৈঠকে এসেছে।
অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষার পন্থা ঠিক করতে ‘ইনোভেশন টিম’ গঠন করা হয়েছে। তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণের বিষয়ে মূল্যায়ন পদ্ধতির বিষয়ে প্রস্তাব তৈরি করবে। টিমে মাউশি, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এবং এনসিটিবি কর্মকর্তারা আছেন।
আর উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমের বিষয়ে প্রস্তাব ঠিক করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। করোনাকালে শিক্ষাব্যবস্থা সাজানোর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) বাতিল করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অটো পাস’ দেয়ার চিন্তা এখনও করছি না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। করোনার কারণে পিইসির পরিবর্তে স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে। অন্য শ্রেণিতেও বার্ষিক পরীক্ষা হবে।
অন্যদিকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে। জানা গেছে, জেএসসির পরিবর্তে বার্ষিক পরীক্ষার চিন্তা করা হচ্ছে। সিলেবাস সংক্ষেপ করে পরীক্ষা নেয়া হবে। আরেকটি বিকল্প হচ্ছে- ‘অটো পাস’।
করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব না হহলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। অবশ্য স্বল্পপরিসরে মূল্যায়নের প্রস্তাবও আছে। সেজন্য ‘ইনোভেশন কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর।
Discussion about this post