নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে ডিভাইস এবং স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা পায় সে লক্ষে আমরা কাজ করছি। আশা করছি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমরা জানাতে পারবো।’ বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট সন্ধ্যা) জুম অ্যাপসের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘যেকোন সংকট শুধু সমস্যাই নিয়ে আসে না, সম্ভাবনার দ্বারও উন্মুক্ত করে। এই মহামারী পরিস্থিতিতেও আমরা সেই শিক্ষা পেলাম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর জন্য যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেটা হয়তো আরও দশ বছর পরে নেয়া হতো। কিন্তু সেই উদ্যোগ এখনই নেয়া হল এটি সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা হিসেবে দেখা দিয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করছেন সেগুলো করোনা পরবর্তী সময়েও কাজে আসবে। আমাদেরকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন কোর্স অফার করতে হবে। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি এটিও চালু করতে হবে। কারণ যারা কাজে ঢুুকে যাবে তাদেরকেও সুযোগ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে ঢুকেও যেন তারা সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা অনস্বীকার্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালু করতে যে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সেটা প্রশংসনীয়।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এই করোনা মহামারী পরিস্থিতি অনলাইন শিক্ষা গ্রহণ একটা অপরচুনিটি। কারণ এই প্যানডেমিক সিচুয়েশন কবে যাবে সেটা আমরা জানি না। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এই সুযোগটাকে অ্যামব্রেস করতে পারে। দেশে অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম সফল করতে হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিকল্প নেই। কারণ এটি সমগ্র বাংলাদেশকে কাভার করে।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘করোনা মহামারী পরিস্থিতির শুরু থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর জন্য কলেজগুলোকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক ও সুসংগঠিতভাবে অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর জন্য আমাদের এই উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘এই কার্যক্রমের আওতায় অনলাইনে এক হাজার ৪৫৮ জন শিক্ষকের এক হাজার ৪৫৮টি কোর্সে মোট ১৭ হাজার ৫০০টি ভিডিও ক্লাস অপলোড করা হবে। ৩১টি ডিসিপ্লিনের এই অনলাইন ক্লাস গ্রহণ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। একজন শিক্ষার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খুব সহজে এই ভিডিও ক্লাস দেখতে পাবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘আজকে আমরা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি এটি সম্ভব হতো না যদি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার আমাদের না দেখাতো। এই জন্যই দেশ উন্নয়নে ভিশিওনারী পলিটিক্যাল লিডার দরকার হয়। দেশ পরিচালনায় ভিশন লাগে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন ভিশিওনারী পলিটিক্যাল লিডার। তাঁর ভিশনের উপরেই বর্তমানে আমরা চলছি। তাঁর যে শিক্ষাভাবনা ছিল সেই শিক্ষাভাবনাই আমাদের মূলভিত্তি। তাঁর দর্শন নিয়েই আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করছি।’ এসময় ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা প্রবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ধন্যবাদ জানান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মশিউর রহমান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post