এক সাক্ষাতকারে তিনি সাংবাদিকদের জানান, “২০১০ শিক্ষা প্রণয়ন কমিটি সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে উপজেলা বা জেলাভিত্তিক অভিন্ন প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার কথা বলে যে, পরীক্ষায় সংশ্নিষ্ট সব শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এই পরীক্ষার ভিত্তিতে বৃত্তি প্রদানের কথা বলা হয়। পরে সেই প্রস্তাবিত পরীক্ষাটি পঞ্চম শ্রেণি শেষে জাতীয় সমাপনী পরীক্ষা করা হয়।”
কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ আরো বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বলা যায় পরীক্ষার মধ্যেই আবদ্ধ হয়ে আছে। পঞ্চম শ্রেণি শেষে জাতীয় পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণি শেষে জাতীয় পরীক্ষা, দশম শ্রেণি শেষে জাতীয় পরীক্ষা আবার দ্বাদশ শ্রেণির পর জাতীয় পরীক্ষা। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ও অন্যান্য পরীক্ষা তো রয়েছেই। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার বেড়াজালে আবদ্ধ। অথচ উন্নত বিশ্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই মূল্যায়ন করা হয় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
তিনি বলেন, উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ফিনল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের ১৯ বছর বয়সের আগে জাতীয় কোনো পরীক্ষাই নেই। মূল্যায়ন করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত পড়ার পর তিন বছরব্যাপী মেট্রিকুলেশন পর্যায়। অর্থাৎ ১৯ বছর বয়সে মেট্রিকুলেশন নামে প্রথম একটি পাবলিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের দিতে হয়। অথচ সে দেশে শিক্ষা তুলনামূলক বিশ্বমানে শীর্ষে এক, দুই, তিনের মধ্যে থাকে।
তিনি বলেন, আমাদের পরীক্ষানির্ভর শিক্ষা হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা না বুঝে মুখস্থবিদ্যায় মনোযোগী হয়। ফলে বাস্তব জীবনে এই শিক্ষা অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপযোগী হচ্ছে না। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়ই শিক্ষার্থীদের ব্যাপক দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। ভাইভা নিতে গেলেও দেখা যায় তারা অনেকেই মৌলিক বিষয়গুলো জানে না; তত্ত্বগত বিষয়ের বিশ্নেষণে তারা অসহায়। তারা বুঝে পড়েনি, চিন্তা করতে শেখেনি এবং প্রশ্ন করে করে আরও শিখতে সুযোগ পায়নি। মুখস্থ করেই ভালোভাবে পাস করে এসেছে।
খলীকুজ্জামান বলেন, এবার করোনাদুর্যোগ পরিস্থিতিতে পঞ্চম শ্রেণি শেষে সমাপনী পরীক্ষা এবং জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হচ্ছে না। আমি চাই পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক।
Discussion about this post