নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসের কারণে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসিসহ সমমানের পরীক্ষার সময় আরও পিছিয়ে যেতে পারে। মহামারির মধ্যে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এটি অনেকটা নিশ্চিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে কয়েকদফা বাড়ানোর পর আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি রয়েছে। এই ছুটি আরও বাড়ানোরও সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে তা নিশ্চিত নয়। এতে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর।
জানা গেছে, প্রতিবছর সাধারণত জুলাইয়ে দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী ও অক্টোবরে নির্বাচনী পরীক্ষা হয়। দ্বাদশ শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা জুলাই-আগস্টে ও ডিসেম্বরে নির্বাচনী পরীক্ষা হয়। আর নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ও ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে এইচএসসির ফরম পূরণ করা হয়। ইতোমধ্যে উভয় শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেছে।
এছাড়া একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও হয়নি। একাদশ শ্রেণিতে কলেজ পর্যায়ের বিভিন্ন ক্লাস টেস্ট আর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ‘অটো পাস’ দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তাদের আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষা আরও পিছিয়ে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। করোনার কারণে পাঠদান বন্ধ। এ কারণে পরীক্ষা যথাসময়ে হবে কিনা সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিষ্ঠান খোলার পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসএসসি দুই বছরের প্রোগ্রাম হলেও ২৫ মাস পর পরীক্ষা হয়। বাস্তবে শিক্ষার্থীরা ১৭-১৮ মাস পাঠদান পায়। আর এইচএসসি দুই বছরের প্রোগ্রাম হলেও পাঠদান হয় ১৬ মাসের মতো। সেই হিসাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। সে জন্য অভিভাবকরা ইতোমধ্যে দাবি তুলেছেন, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করিয়ে পরীক্ষা দুটি নেয়া প্রয়োজন। এরসঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উচ্চশিক্ষারও সম্পর্ক রয়েছে।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান জিয়াউল কবীর দুলু বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম শেষ করেই সরকার পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করুক। নইলে শেখা ও জ্ঞান অর্জনের ঘাটতি পরবর্তী জীবনে ক্ষতির কারণ হতে পারে।’
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যৌক্তিক কারণেই এসএসসি ও এইচএসসির সিলেবাস কমানোর সুযোগ নেই। গোটা পাঠ্যবই শেষ করেই পরীক্ষা হবে। সিলেবাস শেষ করতে কতদিন প্রয়োজন হবে এখনই বলা যাচ্ছে না। কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তা অনিশ্চিত। পরীক্ষা পেছানোর প্রয়োজন হতে পারে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন ও বাকি অংশের মূল্যায়নের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
Discussion about this post