নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদরা। তাদের মতে, আমেরিকায় করোনা নিয়ন্ত্রণের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দু’সপ্তাহের মধ্যেই ৯৭ হাজার শিশু করোনা আক্রান্ত হয়। পরে দ্রুত বিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেয় আমেরিকার প্রশাসন। আমেরিকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, সুরক্ষা ও স্বাস্থবিধির তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কয়েক ধাপ পিছিয়ে রয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে করোনা ভয়াবহ রূপ নেবে। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করোনা সংক্রমণের বেশি ঝুঁকিতে পরবে। কারণ শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হলেও সেটি রাখবে না।
প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৭টি। এতে শিক্ষার্থী ২ কোটি ১৯ লাখ ৩২ হাজারের বেশি। কিন্ডারগার্টেন (কেজি) আছে ৭০ হাজারের বেশি যেখানে কয়েক লাখ শিশু আছে। করোনাকালীন সময়ে গত ছয় মাস বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে শীতের মৌসুমে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিদ্যালয় খোলার বিষয়টি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের ভাবিয়ে তুলছে। তাদের মতামত, করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা একটি ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত হবে। বিশ্বের অনেক দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এক সপ্তাহ পর ফের বন্ধ করেছে। আমাদের দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোন পরিবেশ তৈরি হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২ জন। আর নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৭৫ জন। করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৪৮। এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৫ হাজার ১৬১ জন। ৩ হাজার ৯৯৬ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ১৬৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৬১৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ৩৯৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৬৬৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২৯৬ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১১৮ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৪২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ২৪ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। সারাদেশে করোনা আক্রান্তে ৫ হাজার ১৬১ জনের মধ্যে ১০ বছরের নিচে বয়স্কের ছেলেমেয়ের মৃত্যু সর্বোনিম্ন।করোনা নিয়ন্ত্রণ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিলে এসব শিশুদের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দেশে করোনা মহামারীর কারণে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো ১৭ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করা হয় যা আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এই পরিপত্রের বলা হয়েছে : শ্রেণীকক্ষসহ বিদ্যালয়ের পুরো আঙিনা ও সব আসবাবপত্র সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং জীবাণুমুক্ত করা, শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র ‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’, সাবান, ব্লিচিং পাউডার, মগ, জগ ও বালতি ইত্যাদি কেনা, ওয়াশ ব্লক ও টয়লেট সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, অস্থায়ীভাবে হাত ধোয়ার স্থান নির্ধারণ করে হাত ধোয়ার পানি ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজন হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য শ্রমিক নেয়া এবং কোভিড-১৯ মেয়াদকালে ইন্টারনেট ডেটা কেনা। পরিপত্রে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকার আলোকে নিজ নিজ বিদ্যালয় স্থানীয়ভাবে পরিকল্পনা করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় পুনরায় চালুর প্রস্তুতি বিষয়ক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করার কৌশল নির্ধারণে সারাদেশের মাঠপর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মতামত নিচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অনেকে প্রথম ধাপে জেলা পর্যায়ের ২৫ শতাংশ বিদ্যালয় খুলে দেয়ার প্রস্তাব জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
উত্তরা আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মারিয়া আক্তারের মা আফরুজা বেগম বলেন, করোনা শুরু হওয়ায় স্কুল বন্ধ ঘোষণা দেয়। এখন মেয়ে বাড়িতে বসে থাকলেও লেখাপড়ায় মনোযোগ নেই। তবে মাঝেমধ্যে স্কুলের শিক্ষক মোবাইলে ফোন দিয়ে তার লেখাপড়ার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। করোনাকালীন সময়ে স্কুল খুললেও তার মেয়েকে তিনি স্কুলে পাঠাবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে ভিন্ন কথা বলেন গাইবান্ধা জেলার বোনারপাড়া সরকারি কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আরিফুর ইসলামের অভিভাবক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক স্কুল খোলার নির্দেশনা এলে কয়েকদিন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে কম আসবে। বিদ্যালয় চলার কয়েকদিন পরেই নিয়মিত শিক্ষার্থীরা আসতে থাকবেন। তখন বাধ্য হয়ে নিজের সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু সংখ্যক স্কুল খোলা থাকলেও কড়াকড়ি স্বাস্থ্য মেনে চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খুললেও বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা আছে। কারণ ঘনবসিত এই দেশে বাড়ির বাইরে যখন মানুষ বের হচ্ছেন তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বললেও অধিকাংশ মানছেন না। সেখানে শিশুরা স্কুলে এসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল এটি কখনই সম্ভব নয়।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষকদের-শিশুদের স্কুল খুললে অভিভাবকরা চলে আসবেন। তাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হবে। আগামী ছয় মাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ তৈরি হবে না। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রেখে বিদ্যালয়ে পাঠাদান পরিচালনা নির্দেশনা যদি দেয়, সেটি বাস্তবতার সঙ্গে কখনই সম্ভব নয়। শিশুদের মুখে মাস্ক পরা, হাত পরিষ্কার মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়বে। দেখা যাবে, শিশুরা ক্লাসের ভেতরেই বারবার মুখের মাস্কে হাত দিচ্ছে এবং খুলে ফেলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, করোনাভাইরাসে গত ছয় মাস স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বসে আছে। অনলাইনে কখনই পরিপূর্ণ লেখাপড়া হয় না শিক্ষার্থীদের। তবে এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ঠিক হবে কিনা- সেটি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে সংশ্লিষ্টরা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়বে বলে সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও বারবার সতর্ক বাণী করেছে- কিছু দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলতে। আবার যেসব দেশে করোনার প্রথম ঢেউ চলছে সেখানে দ্বিতীয় ঢেউ আসবে। আমরা দেখেছিÑ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শীত মৌসুমে করোনায় অনেক মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। বাংলাদেশে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে শীত আসবে। এই শীতে মৌসুমে মানুষের জ্বর, সর্দি ও কাশি বেড়ে যায়। এবার জ্বর, সর্দি ও কাশির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। এজন্য করোনা আক্রান্ত জটিল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সতর্ক বাণী বিবেচনায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা আসবে। যারা আগামী দিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। তাদের ঝুঁকির মুখে ফেললে আগামীর বাংলাদেশ ঝুঁকির মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণীকক্ষের তুলনায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি আছে। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী শিশুদের শ্রেণীকক্ষে বসানো সম্ভব না। বিদ্যালয়ে অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। আর প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। সার্বিক বিবেচনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই মুহূর্তে বিদ্যালয় খোলা সুমীচীন হবে না।
ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশুদের ক্লাসে বসানোর ব্যবস্থা করলেও স্কুল ছুটির পরে বাড়িতে ফেরার পথে স্বাস্থ্যবিধি মানবে না। করোনা প্রতিরোধে টিকা এলে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকবে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, বিশ্ব থেকে করোনাভাইরাস একবারে চলে যাচ্ছে না। সেখানে প্রাথমিকসহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে তো হবেই, তবে খোলার আগে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও শিশুদের করোনা আক্রান্ত কম হচ্ছে, সেটাও একটা ব্যাপার কাজ করবে বলে মনে করেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
অন্যদিকে হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা মহামারীর সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। অনুমান নির্ভর কিংবা সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে না।
ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে সারাদেশে করোনার জরিপ করতে হবে। জরিপের আগেই প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত ভয়ঙ্কর হবে। কারণ বয়স্কদের তুলনায় শিশুরা করোনা সংক্রমণ বেশি ছড়ায়। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন, এই ধারণা বাস্তবের সঙ্গে কোন মিল নেই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন-শীতের মৌসুমে করোনার সেকেন্ড ওয়েভের (দ্বিতীয় ঢেউ) আশঙ্কা রয়েছে। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন- দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলায় চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যবিভাগ প্রস্তুত থাকার কথাও বলেছেন মন্ত্রী। সরকারের বিভিন্ন নীতি-নির্ধারকদের মুখ থেকে যে কথাগুলো শুনছি এরমধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। যে কারণে যারা করোনা নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছিলেন- সেটি কথার কথা বলেছিলেন, এটি বিজ্ঞানসম্মত ছিল না।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষার্থীরা অন্য ক্লাসে ভর্তি হতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন আবার ঘরে ফিরছেন। ঘরে ফিরে সন্তানদের সঙ্গে মিশছেন। সবাই যেভাবে চলাচল করছেন এতে বোঝা যায়, দেশে করোনাভাইরাস বলতে কিছু নেই।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোন দেশের সরকার চাইবে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলতে। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীদের কিছু অভিভাবক ঠিকই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন। আবার কিছু অভিভাবক সন্তানদের পাঠাবেন না।
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া রেজওয়ান বলেন, দেশ থেকে করোনাভাইরাস কবে দূর হবে, সুনির্দিষ্ট সময় কেউ বলতে পারছেন না। শিশুদের শ্রেণীকক্ষে ফিরে যাওয়ার আগে স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চালানোর অবকাঠামো নেই। টিকা ও ভ্যাকসিন বের হলে তখনি বিদ্যালয় খোলা যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেন এই অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া রেজওয়ান আরও বলেন, ভিকারুননিসায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী। করোনার ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে অভিভাবকরা সন্তানদের পাঠাবেন না। শিশুরা স্বাস্থ্যবিধি মানবে না। কারণ শিশুদের মুখে মাস্ক পরালেও দেখা যাবে বারবার মাস্ক খুলে ফেলছে। এতে করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে ।
সূত্র: সংবাদ
Discussion about this post