নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি স্থগিত হয়ে গেছে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পরীক্ষা নেয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
গত সপ্তাহে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, চার সপ্তাহের সময় দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হবে। পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতি, কতটুকু পরীক্ষা নেয়া হবে সে ব্যাপারে কর্মপরিকল্পনা চলতি সপ্তাহেই জানিয়ে দেওয়া হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কতগুলো বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া যায়, সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।
গত ১ এপ্রিল চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও করোনার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। এবার ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর জন্য প্রায় দুই হাজার ৫০০ কেন্দ্রে প্রস্তুত করেছিল ১১টি শিক্ষা বোর্ড। তবে করোনার কারণে এখন প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রায় পাঁচ হাজার কেন্দ্র প্রয়োজন হবে। সে প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে বোর্ডগুলো।
জানা গেছে, সব বিষয়েই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে কমতে পারে পূর্ণ নম্বর। আজ মঙ্গলবারই এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন বলে সূত্র জানায়। এই পরীক্ষা আয়োজনে দুটি বিকল্প সামনে রাখা হয়েছে। প্রথমত, প্রতি বিষয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর কমানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যাবহারিক না থাকা বিষয়গুলোতে পূর্ণ মান ৫০ শতাংশ করে কমানোর চিন্তা আছে। ব্যাবহারিকসহ বিষয়গুলোয় ব্যাবহারিক নম্বর ঠিক রেখে এমসিকিউ ও সৃজনশীল নম্বর ৫০ শতাংশ কমানো হবে।
অন্য প্রস্তাবে এমসিকিউ কিংবা সৃজনশীল অংশের যেকোনো একটি পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহারিকের নম্বর ঠিক রেখে নম্বর সমন্বয় করা হতে পারে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্ট কলেজকে ব্যাবহারিক নেয়ার অনুমতি দেয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বোর্ডগুলো। তবে বিষয় কমানোর কথা নাকচ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষামন্ত্রীর কথামতো নির্দিষ্ট সময়ে এইচএসসি ও সমামানের পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কিংবা বুধ-বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ বিষয়ে সাংবাদিকদেরকে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষা শুরুর পর সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি বাদে প্রতিদিন পরীক্ষা হতে পারে। দ্রুত এই পরীক্ষা শেষ করতে চায় সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্ত শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা পাব, সে অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুত রয়েছি।’
সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। গত মার্চের শুরুতেই কিছু বোর্ডের প্রশ্ন মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়। তবে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে কিছু বোর্ডের প্রশ্ন পাঠানো সম্ভব হয়নি। গত সপ্তাহে এসব প্রশ্নপত্র পাঠানো শেষ হয়েছে। এখন নতুন করে প্রশ্ন ছাপানোর সুযোগ না থাকায় আগের প্রশ্নেই পরীক্ষা হবে। আংশিক নম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে কেন্দ্র সচিবদের তা পরীক্ষার দিন জানিয়ে দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের জানাবেন তাঁরা।
Discussion about this post