নিজস্ব প্রতিবেদক
শাহরিমা তানজিনা অরণি।ছোটবেলা থেকেই মেধাবী মেয়েটি এসএসসি, এইচ এসসি তে কৃতিত্বপূর্ণ ফল করে বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলো।কিন্তু ডাক্তারী পড়তে গিয়ে মনে হলো এটি তার জন্য নয়! তাই পরিবারের অনিচ্ছা স্বত্বেও ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে! মন খারাপ হলেও সেদিন মেনে নিয়েছিলেন মা । কথা দিয়েছিলেন সেরা কিছু করার । কথা রেখেছেন অরণি । অনার্স ফাইনালে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছেন। শিক্ষার্থী ও সহপাঠীদের মাঝে আগ থেকেই তিনি মেধাবী মুখ হিসেবে পরিচিত। আর সে কারণে পেয়েছিলেন ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে মনোনয়ন। এর মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল তার ছাত্র রাজনীতিতে পথচলা।
ডাকসুর আন্তর্জাতিক সম্পাদক থাকাকালীনও বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মসূচি সম্পন্ন করেছিলেন। যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নজর কেড়েছিল। লড়েছেন শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ইমেইল একাউন্ট দেয়ার দাবিতে।
আইন বিভাগের অনার্স ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়ায় সহপাঠী-সহকর্মী ও শিক্ষকরা তাকে স্বাগতম জানিয়েছেন। ফলাফল নিয়ে শাহরিমা তানজিনা অরণি তার টাইমলাইনে জানিয়েছেন তার অনুভূতির কথা :
মানুষের খুব কাছে থেকে কাজ করার ইচ্ছা থেকেই সবসময় ডাক্তার হতে চাইতাম। ২০১৫ এর শেষের দিকে যেদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তি হয়ে যখন ঢাকা ফিরছিলাম, সারা রাত শুধু মাথায় একটা বিষয় কাজ করে, ‘can we really have a plan for everything?’ এই প্রশ্নের উত্তর পেতে ব্যার্থ হয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। উত্তর পেলাম রেসাল্টের পর। আমি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করি, আর ভীষণ ভাবে বিশ্বাস করি, He always has a plan! তাই অনেক অনেক ভেবে বেছে নেওয়া পথকে পরিবর্তন করে রাতারাতি সিধান্ত নিলাম আইন পড়বো। জীবনে খুব তীব্র ভাবে আমি কখনো কিছু চাইনি। শুধু যা পেয়েছি, তা আঁকড়ে ধরেছি খুব শক্ত করে৷
এই পথে যে দীর্ঘ যাত্রা আমি শুরু করেছি, তার প্রথম ধাপ আজ শেষ করলাম৷ সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত আর সকলের দোয়া ও শুভাশিস নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে অনার্স জীবনের ইতি টানলাম। আমার এই অর্জনের সবটুকুর পাওনাদার আমার পরিবার, যারা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটা আমাকে আমার মতন নিতে দিয়েছে। ব্যাক্তিগতভাবে আমার অনার্স জীবনের প্রাপ্তি আমার সহপাঠীরা। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আলাদা হতে পারে, but somewhere in the line, we coincide. বেঁচে থাকার লড়াই আর টিকে থাকার আপ্রাণ চেষ্টার যে সৌন্দর্য্য আর মহিমা তাদের সবার জীবনকে কাছে দূরে যেভাবেই হোক দেখে শিখেছি। আর স্বল্প হলেও দীর্ঘ এই পথটা একা পাড়ি দেওয়ার মানুষ আমি নই। আমার এই জার্নির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, বিভিন্ন ধাপে যারা আমার হাত আকড়ে ছিলেন, তাদের ঋণ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমার জীবনটা খুবই তুচ্ছ। জীবন উজাড় করে দেওয়া ভালবাসা ছাড়া মানুষ হিসেবে আমার ফিরিয়ে দেওয়ার কিছু নাই৷
Today I can humbly say to my five years back younger self that it’s okay not to have a plan. It’s okay not to fit in a box that others throw at you. It’s okay to wonder, to wander, to be lost and to discover yourself everyday. It’s okay to be you!
Discussion about this post